কেমন আছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদি

ইরানের নারী অধিকার কর্মী নার্গিস মোহাম্মদি মোহাম্মদী। ছবি: সংগৃহীত

কেমন আছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদি

অনলাইন ডেস্ক

ইরানের নারী অধিকার কর্মী নার্গিস মোহাম্মদী এ বছর নোবেল শান্তি পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। ইরানে নারীদের উপর যে নিপীড়ন চালানো হচ্ছে তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নার্গেস মোহাম্মদীকে শান্তিতে নোবেল দেয়া হয়েছে। কারাগারে থেকেই বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের এই লড়াকু সৈনিক নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে নার্গিস মোহাম্মদীকে বর্তমানে ইরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।

২০১১ সাল থেকে তাকে বেশ কয়েকদফা কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এদিকে ইরানের একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি জানিয়ে কারাগানে বসেই পুনরায় অনশন শুরু করছেন তিনি। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) নরওয়ের অসলোতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছে তার পরিবার।

রোববার নার্গিস মোহাম্মাদির হাতে নোবেল পুরস্কার তুলে দেওয়ার কথা ছিল।

তবে কারাগারে থাকায় তিনি এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। এ জন্য তার পক্ষে তার পরিবারের সদস্যরাই এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন। এরই মধ্যে নার্গিস মোহাম্মদির স্বামী তাঘি রহমানি, তাদের দুই সন্তান আলী ও কিয়ানা রহমানি এবং তার ভাই হামিদ রেজা মোহাম্মদি অসলোতে অবস্থান করছেন।

শনিবার অসলোতে এক সংবাদ সম্মেলনে তার ভাই হামিদ রেজা বলেছিলেন, তিনি (নার্গিস) আজ আমাদের সাথে নেই। তিনি কারাগারে আছেন। ইরানের বাহাই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনি অনশন শুরু করবেন। তবে তার উপস্থিতি আমরা অনুভব করছি।

এর আগে গত নভেম্বরে নারী অধিকার আদায়ে জেলে বসে অনশন শুরু করেছিলেন ৫১ বছর বয়সী নার্গিস। সেসময় এক বিবৃতিতে নোবেলজেয়ী নার্গিসের পরিবার জানায়, তিনি বর্তমানে ইরানের রাজধানী তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দি আছেন। সেখানে অসুস্থ নারী বন্দিদের চিকিৎসা নিয়ে অবহেলা এবং নারীদের বাধ্যতামূলক হিজাব পরার নীতির প্রতিবাদে অনশন শুরু করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা ও স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল পরিবার।

পুরষ্কার ঘোষণার সময় নোবেল কমিটি বলেছিল, নার্গিস মোহাম্মদীর সাহসী ভূমিকার জন্য ব্যক্তিগত জীবনে তাকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-এন্ডারসেন বলেছিলেন, এনিয়ে ইরানের শাসক গোষ্ঠী তাকে ১৩ বার গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে তাকে পাঁচবার দোষী সাব্যস্ত করে সর্বমোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এক বছর আগে ইরানের নারীরা যে বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন সে প্রেক্ষাপটে নার্গেস মোহাম্মদীকে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়। ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুর পর সে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল।

নার্গিস মোহাম্মদী ইরানের জাঞ্জানে ১৯৭২ সালের ২১ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। ইরানের আরেক মানবাধিকারকর্মী এবং নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী শিরিন এবাদির নেতৃত্বে ডিফেন্ডারস অফ হিউম্যান রাইটস সেন্টার (ডিএইচআরসি) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট তিনি।

নার্গিস মোহাম্মদী ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে একজন পেশাদার প্রকৌশলী হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায়, তিনি শিক্ষার্থীদের সংবাদপত্রে নারীর অধিকার সমর্থনকারী নিবন্ধ লিখেছিলেন এবং রাজনৈতিক ছাত্র গোষ্ঠী তাশাক্কোল দানেশজুয়ি রোশানগারান এর দুটি সভায় গ্রেপ্তার হন।

news24bd.tv/DHL