উপহার দেওয়া জিনিস ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে

প্রতীকী ছবি

উপহার দেওয়া জিনিস ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে

 মুফতি আবদুল্লাহ নুর

ওমর (রা.) বলেন, আমার একটি ঘোড়া আল্লাহর পথে দান করলাম। যার কাছে ঘোড়াটি ছিল সে এর অধিকার আদায় করতে পারল না। তখন আমি তা ক্রয় করতে চাইলাম এবং আমার ধারণা ছিল যে, সে সেটি কম মূল্যে বিক্রি করবে। এ সম্পর্কে নবী (সা.)-কে আমি জিজ্ঞাসা করলাম।

তিনি বললেন, তুমি ক্রয় করবে না এবং তোমার দান ফিরিয়ে নেবে না, সে তা এক দিরহামের বিনিময়ে দিলেও। কেননা যে ব্যক্তি নিজের দান ফিরিয়ে নেয় সে যেন নিজের বমি পুনরায় ভক্ষণ করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪৯০)

উল্লিখিত হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসরা বলেন, দান ও সদকা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত এবং এর উদ্দেশ্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মুমিনদের নানাভাবে দান ও সদকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।

সুতরাং মুমিন দান-সদকার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য, কল্যাণ ও বরকত লাভের আশা করবে। আর যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করা হয়, তা দ্বিতীয়বার ফিরিয়ে নেওয়া উচিত নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) দান ফিরিয়ে নেওয়াকে বমি পুনরায় ভক্ষণ করার সঙ্গে তুলনা করেছেন। অর্থাৎ নিজের বমি পুনরায় খাওয়া যেমন অপছন্দনীয়, মুমিনের কাছে দান ফিরিয়ে নেওয়া তেমনই অপছন্দনীয় হওয়া উচিত।

উপহার ও দান ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামী শরিয়তের বিধান হলো, যদি দানের বস্তু হস্তান্তর করা না হয়, কেবল মৌখিক ঘোষণা দেওয়া হয়, তবে তা ফিরিয়ে নেওয়া সর্বসম্মতিক্রমে বৈধ। আর যদি দানের বস্তু হস্তান্তর করা হয়, তবে ফিকহশাস্ত্রের বেশির ভাগ ইমামের মতে দান ফিরিয়ে নেওয়া নাজায়েজ। তাদের মতে, এ ক্ষেত্রে কেবল পিতা সন্তানকে দেওয়া উপহার ফিরিয়ে নিতে পারবে।

হানাফি মাজহাব অনুসারে দানের বস্তু হস্তান্তর করা হলেও তা ফিরিয়ে নেওয়া জায়েজ। অবশ্য হানাফি মাজহাব অনুসারেও দানের জিনিস ফিরিয়ে নেওয়া অপছন্দনীয়।

ব্যক্তি যদি দানকৃত জিনিস ব্যয় করে ফেলে বা কোনো কারণে তা ধ্বংস হয়ে যায়, তবে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে জরিমানা দিতে হবে না। (আল মাউসুয়াতুল ফিকহিয়্যা : ৬/১৬৪)
 

এই রকম আরও টপিক