কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিষয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় আজ

সংগৃহীত ছবি

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিষয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় আজ

অনলাইন ডেস্ক

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদাকে রহিতকরণকে চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রায় ঘোষণা করবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে তৎকালীন বিজেপি সরকার ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার মাধ্যমে কাশ্মীরের স্বশাসনের অধিকারকে কেড়ে নেয়। এই ঘটনার পরে প্রায় এক কোটি বিশ লাখ মানুষের অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরকে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রহিতকরণের মধ্য দিয়ে বিজেপি সরকার কাশ্মীরের শিক্ষা, অর্থনীতি ও বাজেটের দেখভাল করার জন্য প্রতিষ্ঠিত এসেম্বলিকে বাতিল করে দেয়।

নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত অঞ্চলটিকে পরিচালনা করার জন্য একজন লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে নিয়োজিত করা হয় এবং কাশ্মীরের বিভক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারী অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কাশ্মীরকে স্বশাসন, একটি আলাদা পতাকা এবং আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিলো। তবে বৈদেশিক সম্পর্ক, প্রতিরক্ষা ও যোগাযোগের দায়িত্ব কেন্দ্রের হাতেই ন্যস্ত ছিলো। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার স্থায়ী বসবাস ও মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করতে পারতো।

এমনকি কাশ্মীরের বাইরের ভারতীয় নাগরিকদেরকে অঞ্চলটিতে জমি কেনায় বাধাও দেয়ার ক্ষমতা ছিলো অতীতের কাশ্মীর সরকারের।

এবছরের আগস্ট মাসে পাঁচজন বিচারকের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রহিতকরণের বিরুদ্ধে করা ২৩টি আবেদনের শুনানি শুরু করে। আবেদনকারীরা জম্মু ও কাশ্মীরকে একটি বিশেষ অঞ্চল বলে উল্লেখ করেন এবং ৩৭০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে অঞ্চলটির সাথে সমগ্র ভারতের সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরেন। তাদের মতে, এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ভারতের সংবিধানকে লঙ্ঘন করা হয়েছে কারণ কোনো প্রদেশকে ইউনিয়নের অংশ করতে হলে আইনসভার অনুমোদনের দরকার পড়ে।

আবেদনকারীরা আরও বলেন, ৩৭০ অনুচ্ছেদের রহিতকরণ কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতাকে বিপর্যস্ত করেছে এবং এ অঞ্চলের অধিবাসীদের ইচ্ছাকে অবমূল্যায়িত করেছে। কিন্তু বিজেপি সরকারের ভাষ্যমতে, কাশ্মীর ১৯৪৭ সালে ভারতের সাথে যোগ দেয়ার মাধ্যমে নিজে থেকে এই স্বাধীনতাকে বিকিয়ে দিয়েছে।

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পরে অঞ্চলটি জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রেই ছাড় দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার। ২০২২ সালে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ পর্যটক অঞ্চলটিতে ঘুরতে গিয়েছেন। এমনকি কেন্দ্র সরকার প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণাও দিয়েছে। তবুও, অতীতে বেশ কয়েকবার নিরাপত্তা বজায় রাখার ছুতোয় পুরো কাশ্মীরজুড়ে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, যাকে মানবাধিকারকর্মীরা ভিন্নমত দমনের প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

কাশ্মীর অঞ্চলটি মুসলিম অধ্যষিত কাশ্মীর, হিন্দু অধ্যুষিত জম্মু এবং বৌদ্ধ অধ্যুষিত লাদাখ অঞ্চল নিয়ে গঠিত।

news24bd.tv/ab