অবৈধ বালু উত্তোলন করায় ড্রেজার পানিতে ডুবিয়ে দিল গ্রামবাসী

সংগৃহীত ছবি

মেঘনা নদীতে 

অবৈধ বালু উত্তোলন করায় ড্রেজার পানিতে ডুবিয়ে দিল গ্রামবাসী

মো. হৃদয় খান, নরসিংদী :

নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে অবৈধ বালু উত্তোলন করায় ড্রেজার জব্দ করে পানিতে ডুবিয়ে দিল গ্রামবাসী। বুধবার বিকেলে মেঘনা নদীর তিড়ে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে ড্রেজারটি জব্দ করা হয়। পরে স্থানীয়রা ড্রেজারটি আটক করে ডুবিয়ে দেয়া। ওই দিন রাতে স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করলে ড্রেজারটি জব্দ দেখানো হয়।


ড্রেজার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার।

স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিনিয়ত কতিপয় প্রভাবশালী ড্রেজার মালিকরা রায়পুরা সীমানায় অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছে। গত বুধবার বিকেলে ড্রেজার দিয়ে উপজেলা চাঁনপুরের মেঘনা নদীর পাড় গেসে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল।  

পরে স্থানীয় বাসিন্দা নৌকা নিয়ে একটি ড্রেজার আটক করে ড্রেজারটি ডুবিয়ে দেয়া হয়।

ওই দিন রাতে প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ড্রেজারটি জব্দ দেখানো হয়। গত কয়েকমাসে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে সুলতানকে দশ লাখ টাকা জরিমানা করেন উপজেলা প্রশাসন। এরপরও থেমে নেই বালু উত্তোলন।

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, 'প্রায়ই এলোপাতাড়িভাবে অবৈধ ভাবে চাঁনপুর সীমানা এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে। এলাকাবাসীর বাঁধা সত্ত্বেও ড্রেজার মালিকরা ক্ষমতা প্রদর্শন করে হামলা -মামলার ভয় দেখিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে। এতে করে এই অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। '

চাঁনপুর এলাকার ফখরুল ইসলাম, "আর্তনাতের স্বরে বলেন, "রাত দিন এভাবেই যদি তাঁরা কৃষিজমি, ভিটেমাটি কেটে বালু উত্তোলন করে।  আমরা কি এই গ্রামে বসবাস করব না? স্বাভাবিক জীবনযাপন করার অধিকার আমাদের নেই?"

ইউপি সদস্য বশির মিয়া বলেন, 'ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সীমান্তে বালুমহাল ইজারা নিয়ে রায়পুরা উপজেলা সীমান্তে ঢুকে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করছেন একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে চাঁনপুরের পাঁচটি গ্রামে নদী ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভিটামাটি হারা হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন হাজারও পরিবার। গ্রামবাসী জব্দ করে ডুবিয়ে দেয়। উপজেলা প্রশাসন আমাকে দেখে রাখার নির্দেশ দেন। ' 

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করতে না পেরে রাতের আধারে মেঘনার পাড়ে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে আমার নিজের জমি বিলীন হয়ে গেছে। বসত ভিটাও বিলীন হওয়ার পথে। প্রতিদিনই আমরা এলাকাবাসী ছোট-ছোট নৌকা নিয়ে ড্রেজারগুলোকে প্রায়ই তাড়া করি। তারপরও থেমে নেই অবৈধ বালু উত্তোলন। বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। '

চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার জানান,'স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। গত আড়াই মাস ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল তারা। এতে চাঁনপুর ইউনিয়নের ফসলি জমি বিলীন হওয়া পথে। বুধবার বিকেলে চাঁনপুর গ্রামবাসী একটি ড্রেজার আটক করে নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছে বলে সংবাদ পাই। ড্রেজার আটকের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি। '

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জব্দ দেখানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

news24bd.tv/কেআই