সালেহীন শিপ্রার ৪ কবিতা

সংগৃহীত ছবি

সালেহীন শিপ্রার ৪ কবিতা

আজ কবি  সালেহীন শিপ্রার জন্মদিন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

অনলাইন ডেস্ক

জন্মদিনে 

তেমন বিষাদ কই প্রথম শ্বাসের মতো
তেমন আনন্দ কই প্রথম কান্নার মতো!
বয়স বাড়ার দিনে 
জীবনের গাঢ়তম রেখাটিকে খুব মনে পড়ে 
আর কিছু অমিমাংসিত প্রশ্ন নিয়ে 
শরীর ঘনায়ে আসে শরীরের আত্মার কাছে।  
সকাল, উত্তরহীন আসে
দুপুর আলোর আভা
শুকায়ে আসে 
আবার রাতের কাছে ফিরবার আগে, সন্ধ্যায়।  
আনন্দ-জোনাকীরা ছুটে যাক উৎসবের দিকে
জীবনের পূর্ণতা কামনার পেয়ালাও জানে 
পূর্ণতা বলে জীবনের কিছুই থাকে না কখনোই।
কেবল আনন্দ থাকে, 
আনন্দের স্মৃতিধারা বইতেই থাকে।

 
অথচ নিকটতম ফুল থেকে বিচ্ছেদের দিনে 
মহাকাশে, ইথারে ইথারে 
অনেক প্রস্ফুটন ঝলমল করে।  
আতশবাজির মতো উদযাপনের জন্মফুল থেকে
হঠাৎ একলা হওয়া আলো, জন্মদিনে 
নিজের ভেতরে চেয়ে 
বলো তো, কেমন আছো?

রণদৌড়ের ঘোড়া

তুমি সুন্দর, তুমি শারীরিক
বসন্তের কাম আলুথালু
ফুলদের পাশে শুয়ে শুয়ে
দেখে যাচ্ছি।
কথা কমছে, শ্বাস বাড়ছেই
মাথাভর্তি যেন চুল নয়,
কচি ধানক্ষেত
আঙুল ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে খুব হচ্ছে।
রণদৌড়ের ঘোড়া যেন এক
এসে সামনেই নত, বলছে—
আর কিছু নয়, দিগ্বিজয় নয়
চাই তোমাকেই, হৃদয় টলছে।


ধরছ না, হায়, এমন তপ্ত
গলিত লোহা এ
আগ্নেয়মুখে অগ্নিস্নানে লাল…
প্রেম নাকি পাপ
কটেজের রাত মুছে দিচ্ছে এ সমস্তই।
মনে পড়ছে না সেই ব্যথাদেরও যারা
প্রশমিত হতে পারে নাই।
ওই বাহুডাল যেন রাস্তাই,
দুর্ঘটনার নেই শঙ্কাও।
ফোঁটা বৃষ্টির মতো রোমকূপ জুড়ে কম্পন,
তুমি কাঁপছ, কী যে টের পাই!
স্তনবৃন্ত এত ভালো লাগে যেন সমতলে
অমসৃণ গোল ভূমি আর সামান্য ঝোপঝাড়
নাকে ঘষছি।
তির্যক চোখ
তৃষ্ণার বনোভূমিতেই পথ হারিয়েছে,
তাতে ঝরাপাতা ঝ’রে পাতার উপর,
মৃদু ঝরে পড়ার শব্দ।
শীৎকারও এই সুনসানে এক সাইলেন্ট রূপমাত্র,
অধীর ঝর্না পাথর-খাঁজে ছড়ার চলন বুঝে নিচ্ছে।
এত তীব্র যেন সূর্য—
ঝুমসন্ধ্যায়
সাগর-জলে ঢুকে যাচ্ছ।
এই দৃশ্যও
যত সত্য তত মিথ্যে,
জানি অন্য আরেক দেশে
তুমি সকালের রোদ হচ্ছ।

পুরুষ ফুলের ঘ্রাণ 

চুমুর তৃষ্ণা ছাড়া
আর সব তৃষ্ণা ফুরিয়েছে।  
তোমাদের পৃথিবীময় অন্য সব ক্ষুধা ও পিপাসা
তাদের ভিন্ন ভিন্ন নাম আর বর্ণ নিয়েও
তাই কোন দৃশ্য বানাতে পারছে না।
এমত ফুটেছে 
অহংবিহীন এক পুরুষফুল,
স্থিরতার ভাঁজ ভেঙে 
ছড়িয়ে যাচ্ছে তীব্র কাতরতা-ঘ্রাণ ! 
প্রার্থনার প্রশান্তিসম 
স্থিতি আসা প্রেমেও যে রকম থেকে যায় 
মিলনাকাঙ্খার অস্থির কুহুডাক।  
বছরের যে কোনো দিনই তাতে
বসন্তকাল হয়ে উঠতে পারে।  

পুরনো প্রেমিক

ছুটছিলাম টমেটো ক্ষেতের মধ্য দিয়ে 
কাঁপা কাঁপা এলোমেলো একটা প্রজাপতির পিছে 
কৈশোরের আমি ৷
''ওফ্, এই সময়টায় তুমি এত গহন গভীর হয়ে যাও''
শুনেই পা হড়কে গেল যেন,
যেন পড়ছি

ড়ে
যা
চ্ছি
খুব উঁচু থেকে
উচুঁ গাছটির মাথা ছুঁয়ে 
কোন একটা ডাল না ধরতে পেরে
তারপর হঠাৎ ধরে ফেলতে ফেলতে
ভাবছি, 
কে বললো এ কথা !
পুরনো প্রেমিক নাকি যার দেহ 
আগুনের শিখা এই মোমালয়ে 
সে পুরুষ ৷
আর দেয়ালের গায়ে
সঙ্গমের কাঁপা কাঁপা ছায়া দৃশ্য দেখে 
অবচেতনকে 
বকছি,
ধুর ,প্রজাপতির পাখা কখনো কি এভাবে কাঁপে !

news24bd.tv/ডিডি

এই রকম আরও টপিক