মিছিল খন্দকারের ৪ কবিতা

সংগৃহীত ছবি

মিছিল খন্দকারের ৪ কবিতা

আজ কবি মিছিল খন্দকারের জন্মদিন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

অনলাইন ডেস্ক

বাসা ছাড়ার দিনে

তোমাকে মিস করব বারান্দা

মিস করব সামনের পুকুর ও তালগাছ

তোমাকে মিস করব জানালা

মিস করব কুয়াশা-ঢাকা কাচ।

তোমাকে মিস করব গ্যারেজ

মিস করব তিনতলা বেয়ে ওঠা সিঁড়ি

তোমাকে মিস করব কেয়ারটেয়ার

মিস করব তোমার গোয়েন্দাগিরি।

তোমাকে মিস করব বাড়িওয়ালা

মিস করব ফোনের শুরুতে সালাম

তোমাকে মিস করব পাশের ফ্ল্যাট

জানি না তোমার মেয়ের কী নাম!

তোমাকে মিস করব লক করা ছাদ

মিস করব ছাদে দেখা নানাবিধ ভোর

তোমাকে মিস করব ফাঁকা গলি

মিস করব কতিপয় অচেনা গাঁজাখোর।

তোমাকে মিস করব রাতের বেড়াল

মনে পড়বে তোমার নিশব্দ চলাচল

মিস করব পার্শ্ববর্তী টিনশেড

দিনভর চলা একমাত্র চাপকল।

তোমাকে মিস করব তুলসী গাছ

মিস করব কলিংবেল ও কড়ানাড়া

তোমাকে মিস করব পত্রিকা হকার--

মিস করব মাঝরাতে বাড়ি ফেরা।

তোমাকে মিস করব ক্যাচিগেট

মিস করব তালা, পকেটে যার চাবি

তোমাকে মিস করব টানা পাঁচটা বছর

মিস করব ফ্লার্ট করা দোতলার ভাবী!

নৌ-ভ্রমণ

৩০০ জন কবি ও লেখক তারা নদীপথে

রওনা করেছে পিকনিকে

তারা মুরগীর রোস্ট, গরুর মাংস, পোলাও,

চাইনিজ সবজি ও মাছ,

ইলিশ বা চাষের রুই, মাঝারি টুকরা

তারা চা, কফি, সিগারেট, বিয়ার, হুইস্কি...

স্কটিশ কেউ কেউ খাবে,

কেউ পাবে কেরু।

কেরুরা কি ডেকেই ঘুমাবে?

তারা তো কেবিনের টাকা দিয়ে কাটেনি টিকিট

তাই তারা ডেক

তারা ইনটেক কবিতা পড়বে, কেউ কেউ ছড়া

কেউ গল্প পড়বেন, যেমন: স্বকৃত নোমান

নাকি মোজাফফর?

অনিকেত শামীম কি টাইম পাবেন কবিতা পড়ার?

তার না পড়াই ভালো

তাতে পিকনিকের ব্যবস্থাপনায় কোনো ছোটো

ভুল হয়ে যেতে পারে

লঞ্চ চরে উঠে যেতে পারে

শীতকালে বহু লঞ্চ চরে উঠে যায়

তবে তা তিনশ জন কবি ও লেখক নিয়ে নয়

এই হলো ভয়

তাই রাত্রি ও কুয়াশা এড়িয়ে চরগুলো লঞ্চ থেকে দূরে দূরে রয়

সরে।

মাই মেন সিং

আকাশ-পাতাল সব মহলই জানলো বলে

ডাল ধরেছি স্রোতের মতোন ফনা তুলে।

তোমায় চাওয়ার এই আবহাওয়ার নানান মানে—

নিয়ে আমি বসেছি আজ পূর্বাভাসে।

কয়টা তারা ভয়টা নিয়ে যদি টানে,

একটা তুমি দুইটা হয়ে ডানে-বামে

হাঁটতে থাকো, বসেও আছো

উড়ছো আবার—

তুমি হলে সকল কারণ তোমায় পাবার।

এবং তোমার তিলটা এমন আনল ডেকে

টানল সাথে, জানল কিছু সূর্যালোকে?

বলল বসো, বসে থাকার এইতো টুলে—

কিন্তু আমি দেখছি ঘুরে শাখায়-মূলে।

জানলা থেকে তোমার দেখে টেনেছি চেন—

মমিংসিংয়ের নিকট এসে থেমেছে ট্রেন।

অনাদিকালের ধারা

দূরবর্তীকে আর কি নিকটে ডেকে

বলব না বেশ এইসব জীবনের

যতোটা মোদের ছিল সমঝোতা

বাকি সব যুদ্ধের

ডামাডোলসম মনে হয় যদি হোক,

আমরা দুইটা লোক—

একসাথে তাও যাব নাকি বারে বারে

যেখানে নদীর পাড়ে

বাজারের পাশে ছোট দোকানের একটাই শুধু টুল

বলা হবে নাকি ভেজা দুপুরের পাশে

দাঁড়িয়ে থাকার ভুল

হয়েছে যতোটা সেগুলোও থাক

এবার তাহলে বসি—

যেন কোনো এক রশি

দুইদিকে টান দিতে দিতে আরও দিতে

মাঝখান থেকে ছিঁড়ে—

আমরা দুজন জড়িয়ে ধরেছি

কাঁটাময় পৃথিবীরে।

ছিটকে গিয়েছে, ছড়িয়ে পড়েছি

অন্য গ্যালাক্সিতে

সেখানের কোনো প্রাচীন দরদে

যবুথবু হয়ে শীতে

বসে আছি যেন বসে থাকা এই অনাদিকালের ধারা

কোন দেশ থেকে কাকে যেন ডাকি—একদিন পাব সাড়া

তাই উড়ি, পুড়ি, প্রাণপনে ঘুরি

ক্ষীণ গ্রহটার পেটে—

মানুষ মূলত পৌঁছাতে চায় গোলক ধাঁধায়, হেঁটে।

news24bd.tv/ডিডি

এই রকম আরও টপিক