ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনসহ ওয়ার্কার্স পার্টির ২৮ দফা অঙ্গীকার

সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির পলিটব্যুরোর সদস্য নূর আহমেদ বকুল। ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনসহ ওয়ার্কার্স পার্টির ২৮ দফা অঙ্গীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন দমন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও বৈষম্য নিরসন আইন প্রণয়নসহ ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ঘোষণা করেন দলটির পলিটব্যুরোর সদস্য নূর আহমেদ বকুল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও মাহমুদুল হাসান মানিক, পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান ও আনিসুর রহমান মল্লিক।

১ দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন দমন: রাষ্ট্র, সমাজ ও অর্থনীতিতে দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নকে কঠোরভাবে দমন করা হবে।

দুর্নীতি দমনে স্পেশাল কোর্ট তৈরি করে দ্রুত বিচার করার ব্যবস্থা করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলা হবে। অবৈধভাবে পাচারকৃত কালো টাকা আইন করে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঋণ খেলাপি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

২ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ: চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে ন্যায্য বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। খাদ্যপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা হবে। বাজার ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনার জন্য ফড়িয়া প্রথা ও মজুতদারি রোধে কঠোর ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।

৩ রাজনৈতিক লক্ষ্য: ১৯৭২ সালের সংবিধানের আলোকে সমতা ও ন্যায্যতাভিত্তিক বৈষম্যহীন একটি অসাম্প্রদায়িক আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মৌলিক মানবাধিকার, মানবসত্তার মর্যাদা ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা
এবং জবাবদিহিমূলক প্রশাসনসহ একটি গণতান্ত্রিক জনমুখি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলা
হবে। প্রশাসনের সর্বত্র সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া সকল ধরনের মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও দক্ষিণপন্থী রাজনীতিকে প্রতিহত করা হবে। সেইসাথে সংবাদপত্রসহ সকল প্রকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

৪ বৈষম্য নিরসন আইন প্রণয়ন: একটি বৈষম্যনিরোধ আইন প্রণয়ন করা হবে। গ্রাম উন্নয়নে জোর দেওয়া হবে এবং গ্রাম-শহরের বৈষম্য দূরীকরণে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ন্যায্য দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।

৫ শোষণ মুক্তির লক্ষ্যে আইন ও বিধি প্রণয়ন: দেশের মেহনতি মানুষ বিশেষ করে শ্রমিক-কৃষক ও জনগণের অনগ্রসর অংশসমূহকে সকল প্রকার শোষণ থেকে মুক্তি প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৬ সামাজিক ক্ষমতায়ন: বেদে, হিজড়া/ রূপান্তরকামী, দলিত, হরিজন, প্রতিবন্ধী, ঋষিসহ সকল শ্রেণীর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও সামাজিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাজেট বৃদ্ধি ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি বাড়ানো হবে। হিজড়া ও রূপান্তরকামী জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার জন্য উত্তরাধিকার আইনে সংশোধন এনে তাদের সম্পত্তি লাভে অধিকার নিশ্চিত করা হবে। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে মূলস্রোতের জনগণের কাতারে থেকে তাদের অবদান রাখার সুযোগ তৈরি করা হবে।

৭ আদিবাসী, সংখ্যালঘু ও নগরের প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন: পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও ভূমি কমিশন পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। সংখ্যালঘু কমিশন ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা হবে। আদিবাসীদের সংস্কৃতি সংরক্ষণে সহায়তা প্রদান করা হবে। একইসাথে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করা হবে।

৮ নারীর ক্ষমতায়ন: নারী অধিকার, ক্ষমতায়ন ও জেন্ডার সমতা বিধানে জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার সনদ, সিডো সনদ, ভিয়েনা সম্মেলন ও বেইজিং সম্মেলনে প্রদত্ত সকল অধিকার ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইনে নারীর প্রতি যে সকল বৈষম্য রয়েছে তা দূর করে ‘ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড’ চালু করা হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য রোধ করার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একইসাথে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলের কমিটিসমূহে ৩৩% নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা, সংসদে সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, দলিতসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীদের মানবাধিকার সংরক্ষণ, নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া অধিকার নিশ্চিত করাসহ নারীর অধিকার আদায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অধিকতর কার্যকর করা হবে।

৯ যুব অধিকার: একটি কর্মসংস্থানমুখী যুব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যুবকদের চাকরীতে নিয়োগের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হবে। বেকারভাতা প্রদান করা হবে। যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানে উদ্বুদ্ধ করে প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে জমাবিহীন ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।

১০ শিশু-কিশোর অধিকার: জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়ন এবং শিশু শ্রম বন্ধ করার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে স্বাধীন কমিশন গঠন করা হবে। গ্রাম-শহরের প্রতিটি পাড়া মহল্লায় শিশুদের জন্য খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা হবে। শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশে প্রতিটি পাড়া মহল্লায় পাঠাগার গড়ে তোলা হবে। সকল শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

১১ শিক্ষার অধিকার: ২০১০ সালের প্রণীত শিক্ষানীতি অনুসারে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যমুক্ত মাতৃভাষানির্ভর একমুখী, সর্বজনীন ও অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হবে। এই সব পাবলিক স্কুলে বিপুল সামাজিক বিনিয়োগ করে শিক্ষকদের বেতন-কাঠামো ও অবকাঠামো উন্নত করে গুণগত শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে যাতে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও পাবলিক স্কুলের মধ্যে পার্থক্য না থাকে। গ্রাম-শহরের স্কুলের পার্থক্য নিরসন করা হবে।

১২ স্বাস্থ্য সেবা: মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার সুনিশ্চিত করতে সকল নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হবে। গর্ভকালীন শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও শিশুর স্বাস্থ্যকর বিকাশ নিশ্চিত করা হবে। শিল্পক্ষেত্রে সার্বিক স্বাস্থ্যবিধির উন্নয়ন করা হবে। মহামারি, স্থানিক রোগ, পেশাগত স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও অন্যান্য রোগের প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। নারী পুরুষের সাম্যতার ভিত্তিতে স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি (পরিবার পরিকল্পনাসহ) নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

১৩ কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা: কৃষকরা যেন তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম পায় তার জন্য বাজার ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে। খোদ কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য μয়ের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষক যাতে সরাসরি তার উৎপাদন খরচের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ মূল্যে পণ্য বাজারে বিক্রি করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকের জন্য উন্নত ও আধুনিক বাজার-ব্যবস্থার প্রচলন করা হবে। কৃষক যাতে অনলাইনে নিজেই তার পণ্য বিক্রি করতে পারে এবং সরাসরি নিলামেও অংশ নিতে পারে তার জন্য অবকাঠামোসহ তথ্য প্রযুক্তির ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকের স্বার্থে কৃষি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। জোনভিত্তিক শস্য ম্যাপিং করা হবে। ক্ষুধা, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এবং অপুষ্টি থেকে মুক্ত হয়ে, মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা দেওয়া হবে। খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে এবং নিরাপদ খাদ্য বাজারজাতকরণে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হবে।

১৪ শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান: মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে বিরাষ্ট্রীয়করণ ও উদারীকরণের আত্মঘাতী নীতি পরিত্যাগ করা হবে। সংবিধানের নীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রীয়, ব্যক্তিগত ও সমবায়ী মালিকানার সমন্বয়ে অর্থনীতি গড়ে তোলা হবে যাতে উৎপাদন ব্যবস্থা ও বণ্টন প্রণালীর মালিকানার নিয়ন্ত্রণ জনগণের হাতে থাকে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে দক্ষ, উন্নত ও লাভজনক করার বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ভারী শিল্পে বিনিয়োগসহ মাঝারি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে প্রণোদনা দিয়ে রপ্তানিমুখী ও পরিবেশবান্ধব শিল্পনীতি বাস্তবায়ন করা হবে।

১৫ শ্রম অধিকার ও সর্বনিম্ন মজুরি: পুঁজির ঘনীভবন এবং শুধু অবকাঠামো ভিত্তিক ‘সবুজ উন্নয়ন’র বিপরীতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রমের ন্যায্যতা তথা ‘জাস্ট ট্রানজিশন’ এর বিষয়সমূহ নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশের শ্রম আইন শ্রমিকবান্ধব না হওয়ায় আইএলও’র কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইনের সংশোধন করা। ইপিজেডসহ সকল কলকারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। আইনি সুরক্ষাসহ মানসম্মত জাতীয় ন্যূনতম মজুরির মানদ- নির্ধারণ করা হবে। স্থায়ী মজুরী কমিশন গঠন করা হবে।

১৬ শ্রম অভিবাসন ও প্রবাসী কল্যাণ: নারীদের জন্য বিশেষ সুরক্ষাসহ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করা হবে। নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত করা হবে। অভিবাসীদের কল্যাণে বাজেট বরাদ্দ করা হবে এবং সব আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হবে। নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

১৭ বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা, উন্নয়ন প্রসার এবং সফল প্রয়োগের মাধ্যমে দেশ ও জাতির সার্বিক আর্থসামাজিক সমৃদ্ধি অর্জনে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ গড়ে তোলা হবে। মহাকাশ গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়োপযোগী দক্ষ জনশক্তি, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। নির্দিষ্ট কয়েকটি শহরকে আইসিটি শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বিনামূল্যে তথ্য প্রযুক্তি সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় নেওয়া হবে। বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিংএ কর্মসংস্থানের অবকাঠামোসহ পেমেন্ট আদায়ে স্বচ্ছতা ও সহজীকরণ করা হবে।

১৮ জ্বালানি ও খনিজ: একটি স্বচ্ছ জবাবদিহিতামূলক আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা ও নবায়নযোগ্য বিকল্প জ্বালানী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বিদ্যুতের মূল্য না বাড়িয়ে বিদ্যুৎ সেক্টরে দুর্নীতি রোধ করা হবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানী μয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশি তেল, গ্যাস কোম্পানি অনুসন্ধান বাপেক্স’কে আধুনিক প্রযুক্তিসহ আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ জনশক্তিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে কুইক রেন্টাল পদ্ধতি বাতিল করা হবে।

১৯ জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সুরক্ষা: ধীরে ধীরে জীবাশ্ম ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করা হবে। গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে দ্রুত এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতির অর্থায়ন লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড নিশ্চিতের দাবি জানানো হবে। বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানোর জন্য আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। জলবায়ু খাতে প্রাপ্য আন্তর্জাতিক তহবিল দুর্নীতিমুক্ত ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে খরচ করা হবে এবং তা অডিট করা হবে।

২০ নদী ও পাহাড় সংরক্ষণ: উন্নয়নের নামে দেশের নদী, বন, খাল-বিল ধ্বংস বন্ধ করা হবে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ সকল শহরের নদী দখল ও দূষণ বন্ধ করা হবে। পলিথিনসহ প্লাস্টিক বর্জ্য বা দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিল্প-কারখানার দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ বিবেচনায় পরিবেশ সুরক্ষাসহ পরিবেশকেন্দ্রিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

২১ সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নিরাপদ সড়ক: রেল যোগাযোগকে গুরুত্ব দিয়ে নৌ ও সড়ক পথে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশের সকল সড়ক নিরাপদ করার জন্য সরকার ঘোষিত ২৩টি অনুশাসন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৩.৬ ও ১১.২ এবং জাতিসংঘের বৈশ্বিক পরিকল্পনা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য সেইফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচের আলোকে একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও তার কার্যকর প্রয়োগের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

২২ রোহিঙ্গা সমস্যা: রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের নিজ আবাসভূমিতে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

২৩ প্রতিরক্ষা: দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী এবং শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হবে। প্রাপ্ত বয়স্ক সকল নাগরিককে বহিঃশত্রুর আক্রমণ মোকাবেলায় জাতীয় সামরিক প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।

২৪ পররাষ্ট্র: সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়Ñএই নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। সংসদের অনুমতি ব্যতীত কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা যাবে না। পররাষ্ট্র বিষয়ে চুক্তির ক্ষেত্রে উইন-উইন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হবে।

২৫ আঞ্চলিক জোট: জাতীয় উন্নয়নের প্রশ্নে সকল প্রকার স্বার্থ নিশ্চিত করে সকল পর্যায়ে আঞ্চলিক ও উপআঞ্চলিক অর্থনৈতিক ফোরাম যেমন, আসিয়ান রিজিওনাল ফোরাম (এআরএফ), এশিয়া কো-অপারেশন ডায়ালগ (এসিডি), এশিয়া ইউরোপ মিটিং (আসেম), সার্ক, বিমসটেক, ডি-৮ ইত্যাদি ফোরামগুলিকে উদ্যোগী করতে হবে। বিসিআইএম (বাংলাদেশ-চায়না-ইন্ডিয়া-মিয়ানমার) ইকোনমিক করিডোরের উদ্যোগসমূহ সক্রিয় করা হবে।

২৬ ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন: স্বাধীন ফিলিস্তিন আন্দোলনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত থাকবে এবং গাজায় গণহত্যা বন্ধে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে জনমত তৈরি করা হবে।

২৭ ন্যাটোর সম্প্রসারণে বিরোধিতা: এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। সাম্রাজ্যবাদী সকল যুদ্ধ ও স্যংশন বন্ধ করার জন্য জাতীয়-আন্তর্জাতিক পরিসরে জন-আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

২৮ সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা: সাম্রাজ্যবাদ, নয়াউদারতাবাদ, উপনিবেশবাদ ও বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করা হবে। বিশ্ব শান্তি আন্দোলনকে জোরদার করা হবে।

news24bd.tv/FA