সরকার পতনের দাবিতে বিএনপির ডাকা কর্মসূচি বাস্তবায়নের নামে নাশকতা সৃষ্টিকারী মামলার আসামী বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা বরগুনা-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মঞ্চে বক্তব্য দিয়েছেন। এসময় তিনি নৌকাকে বিজয়ী করার জন্য নৌকা মার্কার পক্ষে ভোটও চেয়েছেন।
রোববার(২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের গৌরিচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত নৌকা প্রতীকের জনসভায় বক্তব্য রাখেন মতিউর রহমান রাজা। এসময় বক্তব্যে তিনি সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন শরীফের সমালোচনা করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা -১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের আহ্বান জানান।
বক্তব্যে বদরখালী ইউনিয়ন থেকে সর্বোচ্চ ভোট নৌকায় দেয়া না হলে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেবেন এমন অঙ্গীকারও করেন তিনি।
বরগুনা সদর থানার তথ্যমতে, চলতি বছরের নভেম্বর মাসে সরকার পতনের দাবিতে বিএনপির ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে ও ককটেল বিষ্ফোরণ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের ৪, ৫ ও৬ ধারায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং জিআর ৩৫৪/২৩।
এই মামলায় মতিউর রহমান রাজাকেও আসামী করা হয়েছে। মামলার বাদি বরগুনা সদর থানার এসআই (নিরস্ত্র) মো. আবু হানিফএসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আবু হানিফ জানান, বরগুনা সদর থানার এসআই নুরুজ্জামান মামলাটি তদন্ত করছেন।
মতিউর রহমান রাজা গত ইউপি নির্বাচনে সদরের বরদখালী ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি জেলা বিএনপির (হালিম-নজরুল) কমিটির সদস্য ছিলেন। এছাড়াও বরগুনা জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন মতিউর রহমান রাজা। জেলা বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বদরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বদরখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন শরীফ বলেন, আমি নৌকার প্রার্থী ছিলাম। আমি যাতে নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারি সে জন্য এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বিএনপির মতিউর রহমান রাজাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করে নির্বাচনে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে আমাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। সরকার পতন আন্দোলনে যারা জড়িত সেই বিএনপি নেতাদের এখন নিজের স্বার্থে মঞ্চে উঠিয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আবদুল হালিম মুঠোফোনে বলেন, মতিউর রহমান রাজা মামলার পলাতক আসামী। আমরা তার ব্যপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে যেকোনো সময়ে গ্রেপ্তার করব।
এ বিষয়ে বরগুনা -১ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর একনিষ্ঠ ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা মুঠোফোনে বলেন, জনগণের চাপে রাজা আমাদের জনসভায় এসেছেন এবং বক্তব্য রেখেছেন। তবে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেননি। বিএনপির নাশকতা চেষ্টা মামলার আসামী প্রসঙ্গে মন্টু মোল্লা বলেন, আমাদের এখন ভোট দরকার।
news24bd.tv/ab