শীতেও জুমার দিনে গোসল করতেই হবে?

প্রতীকী ছবি

শীতেও জুমার দিনে গোসল করতেই হবে?

অনলাইন ডেস্ক

জুমার নামাজের জন্য অজু করা যথেষ্ট। আর গোসল করা উত্তম। এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে পাকে বিষয়গুলো সুষ্পষ্ট করেছেন। হাদিসের আলোকে উভয়টিই ভালো ও উত্তম সুন্নাতি আমল।

তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জুমার দিন গোসলের ব্যাপারে খুব বেশি তাগিদ দিয়েছেন। জুমার দিন গোসল করা অতি উত্তম কাজ। হাদিসের একাধিক বর্ণনা থেকে তা প্রমাণিত-

হজরত সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন অজু করল; সে যথেষ্ট করলো ও ভালো করলো। আর যে গোসর করলো সে অধিক উত্তম।

’ (ইবনে মাজাহ)

প্রশ্ন : জুমার দিনে গোসল করা কি আবশ্যক? শীতকালেও গোসল কী করতেই হবে?
উত্তর : হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে, যাদের জন্য জুমা ওয়াজিব, তাদের জন্য জুমার দিনে গোসলও ওয়াজিব। সুতরাং, জুমার দিনে গোসল করা আবশ্যক, যদি আপনি জুমার সালাতে অংশগ্রহণ করতে চান।

জুমার দিনের গোসল
যে ব্যক্তি জুমার নামাজের জন্য গোসল করলো; সে অধিক উত্তম কাজ করলো। সুন্নাত আমল পূর্ণ করলো। কারণ যে ব্যক্তি জুমার দিন অজুর সঙ্গে সঙ্গে গোসল করলো, তা শুধু অজু অপেক্ষা গোসলের মতো অধিক উত্তম সুন্নাত আমল করলো। প্রসিদ্ধ চার ইমামসহ অধিকাংশ আলেম জুমার দিন অজুর সঙ্গে সঙ্গে গোসলের এ পদ্ধতিকে গ্রহণ করেছেন।

গোসলের গুরুত্ব
তবে জুমার দিন অজুর চেয়ে গোসল করাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা প্রমাণিত-

১. হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ জুমার নামাজে আসলে সে যেন গোসল করে। ’ (বুখারি, মুসলিম)

২. জুমার দিন গোসলের তাৎপর্য
হজরত ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু জুমার দিন দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন, এমন সময় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রথম যুগের একজন মুহাজির সহাবা (জুমা পড়তে মসজিদে) এলেন। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে ডেকে বললেন, এখন সময় কত? তিনি বললেন, আমি ব্যস্ত ছিলাম, তাই ঘরে ফিরে আসতে পারিনি। এমন সময় আজান শুনে শুধু অজু করে নিলাম। ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, শুধু অজুই? অথচ আপনি জানেন যে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গোসলের নির্দেশ দিতেন। ’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

৩. জুমার দিন গোসল করা ওয়াজিব
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘জুমার দিনে প্রত্যেক সাবালকের জন্য গোসল করা ওয়াজিব। ’ (বুখারি)

৪. জুমার দিন গোসলের মর্যাদা
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত (নাপাকি থেকে পবিত্রতার) গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং নামাজের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কোরবানি করলো। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কোরবানি করলো। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করলো। চতুর্থ পর্যায়ে আগমন করলো সে যেন একটি মুরগি কোরবানি করলো। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করলো সে যেন একটি ডিম কোরবানি করলো। পরে ইমাম যখন খুতবাহ দেওয়ার জন্য বের হন তখন ফেরেশতারা (ইমামের খুতবাহ) উপদেশ শোনার জন্য (মসজিদে) উপস্থিত হয়ে থাকে। ‘ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, জুমার নামাজের জন্য গোসল করে এ দিনের উত্তম আমলে নিজেদের সম্পৃক্ত করা। একান্ত কোনো কাজে ব্যস্ত থাকলে অজু করেও জুমা পড়ায় দোষ নেই। তবে জুমার জন্য গোসল করাকে আবশ্যক বলেছেন বিশ্বনবি।
news24bd.tv/aa