৪০০ বোমা বানিয়েছেন ‘বোমা মাওলানা’: ডিবি

ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ- ফাইল ছবি।

৪০০ বোমা বানিয়েছেন ‘বোমা মাওলানা’: ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহানগর জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে বোমা বিস্ফোরণের মূল পরিকল্পনাকারী বোমা বিশেষজ্ঞ মুকিত ওরফে বোমা মাওলানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার বোমা মাওলানা গান পাউডার সংগ্রহ করে প্রায় ৪০০ বোমা তৈরি করেন। এসব বোমা তিনি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাপ্লাই (সরবরাহ) করেন। তার সাপ্লাই করা বোমার মধ্যে একটি বোমা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) এক ব্রিফিংয়ে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গত ২৮ অক্টোবর পুলিশ সদস্য জাহিদকে পল্টনের নাইটিঙ্গেল এলাকায় হত্যা করার প্রচেষ্টায় নির্মমভাবে মাথাসহ সারা শরীরে আঘাত করে করে মৃতপ্রায় করে ফেলে রেখে যায় এবং তার পকেট থেকে মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়।

ডিবিপ্রধান জানান, এ ঘটনায় ভাটারা থানার ৩৯নং ওয়ার্ড যুবদল সদস্য, যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবকে গ্রেপ্তার করলে তাদের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেয়া মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। তাদের সাথে থাকা অপর সন্ত্রাসীরা ভাঙচুরসহ এই নারকীয় কাজ করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদেই বেরিয়ে আসে বোমা বিশেষজ্ঞ মুকিত হোসাইন ওরফে বোমা মুকিত সম্পর্কে।

ডিবি জানায়, গ্রেপ্তার মুকিত আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে সে ছাত্রদল মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তার ডান হাতের কব্জি উড়ে যায়। দলীয় আনুগত্য ও উগ্র/সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করে স্বয়ং তারেক জিয়া।

ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রেরিত ১০ কেজি পরিমাণ গান পাউডার সে গ্রহণ করে রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে। এই গান পাউডার দিয়ে কয়েক দফায় প্রায় চারশত হাত বোমা তৈরি করে সে সাপ্লাই দিয়েছে বিভিন্ন থানা যুবদলের আহবায়ক ও সদস্য সচিবদেরকে।

তার সরবরাহকৃত ২০টি হাত বোমা থেকে ১টি হাত বোমা সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে ঢাকা মহানগর জজ কোট আদালতের প্রাঙ্গণে বিস্ফোরিত করে ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তার স্ত্রী হাফসা আক্তার।

২৮ অক্টোবর এবং পরবর্তী হরতাল-অবরোধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক-ভীতি ছড়ানোর কাজে মহানগর যুবদলের দক্ষিণে ৮টি টিম গঠন করা হয়। কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সাথে সমন্বয় করে বিভিন্ন জায়গা থেকে গান পাউডার সংগ্রহ করে তা দিয়ে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো, ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদলের কর্মীদেরকে দিয়ে যানবাহনে আগুন দেয়ার কমপক্ষে ৬টি ঘটনার সমন্বয় করেছে সে।

গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা, জেলখানায় ওয়েলফেয়ার দেখার কিছু অংশের সমন্বয় সে করেছে বিশ্বস্ততার সাথে।

তার দেয়া তথ্যমতে, প্রতিটি যানবাহনে আগুন দেয়ার জন্য আগুন দাতাদেরকে ১০ হাজার টাকা, বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে।

ডিবি আরও জানায়, ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সে প্রায় ৬-৭ হাজার লোকের মিছিল নেতৃত্ব দিয়েছে। নাশকতা কাজে জড়িত বেশ কিছু মিড লেভার নেতাকর্মীর নাম, পরিচয় তার কাছ থেকে পাওয়া গেছে।

news24bd.tv/FA