শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়

শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়

ঘন কুয়াশায় ক্ষতি হচ্ছে ফসলের

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে গত কয়েকদিন থেকেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। ঠান্ডায় জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশায় ঘিরে থাকছে সবকিছু। ক্ষতি হচ্ছে ফসলের।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, হিমালয়ান হিমবায়ুর ফলে গত কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রার পারদ নিচের দিকে নামছে। ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত হয়ে থাকছে সবকিছু। সন্ধ্যা থেকেই কুয়াশা শুরু হয় এই জেলায়। দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে চারদিকের পরিবেশ।

তীব্র এই শীতে জনজীবনে নেমে এসেছে অসস্তি। ভোগান্তিতে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ।  

তারা বলছেন, তীব্র ঠান্ডায় হাত-পা জড়ো হয়ে আসে। সময় মতো কাজে যেতে পারছে না তারা। গ্রামীণ এলাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপ নিয়ে শীত নিবারণ করছেন অনেকে। দরীদ্র মানুষেরা রয়েছে শীতের কাপড়ের সংকটে। ঘন কুয়াশার কারণে ক্ষতি হচ্ছে চাষিদের।

তারা বলছেন, কুয়াশা থেকে সৃষ্ট রোগ থেকে ফসল বাঁচাতে অতিরিক্ত সার-কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে। দেখা দিচ্ছে নানা রোগ বালাই। ফলে কৃষি আবাদে ব্যায় বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে আলু, মরিচ, পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন রকম আবাদ কুয়াশায় কুঁকড়ে যাচ্ছে। চা বাগানের চা পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে । এসব রোগ বালাই থেকে ফসল বাঁচাতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে বেশি।

তবে শীতকালীন ফসলের জন্য এই শীত উপকারী বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ঘন কুয়াশায় নানা রোগ-বালাই সৃষ্টি হলে কৃষকদের পরামর্শও দিচ্ছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা নাইমুল হুদা জানান, শীতে শাকসবজি, গম, বাদাম সহ শীতকালীন অন্যান্য আবাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে কিছু ফসলের জন্য কুয়াশা ক্ষতিকর। কুয়াশা থেকে ফসল সজিব রাখতে আমরা নিয়মিত চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি।

এদিকে অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে শিশু ও বয়স্করা শীত জনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রতিদিন হাসপাতালে ভিড় বাড়ছে। পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে বারান্দাতেই বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীরা।

শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ মনোয়ার হোসেন জানান, ঠান্ডার কারণে শিশুরা ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিদিন রোগী ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশসল শাহ জানান, পঞ্চগড়ে সোমবার সকালে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ কুয়াশা থাকার কারণে সূর্যের আলো মাটিতে প্রবেশ করতে পারছে না। অন্যদিকে হিমালয় থেকে বয়ে আসা বাতাশের তীব্রতায় ঠান্ডার মাত্রা বেশি অনুভূত হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হতে পারে।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক