রূপগঞ্জে গাজীর বিরুদ্ধে ইসিতে তিন প্রার্থীর অভিযোগ

রূপগঞ্জে গাজীর বিরুদ্ধে ইসিতে তিন প্রার্থীর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত সাইফুল ইসলাম, তৃণমূল বিএনপির তৈমূর আলম খন্দকার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া। অভিযোগে তারা নারায়ণগঞ্জের এসপি ও রূপগঞ্জের ওসির প্রত্যাহার দাবি করেছেন।

সোমবার (১ জানুয়ারি) জাতীয় পার্টির (জাপা) সাইফুল ইসলাম এবং মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজান ভূঁইয়া ও তৃণমূল বিএনপির তৈমূর আলম খন্দকার এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

জাপা প্রার্থী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অভিযোগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এলাকার সাধারণ ভোটারদের হুমকি ও মামলার ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে ভোটের পর গুম-খুনের হুমকি দিচ্ছে। জমি ও বাড়ি দখল করে এলাকাছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগে তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপা মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লাঙল প্রতীকে অংশ নিয়েছি। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচারে মাঠে নেমেছি।

কিন্তু সাধারণ ভোটার ও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারে অংশ নেওয়ায় পদে পদে বাধাগ্রস্ত হচ্ছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সময় এবং প্রচার শেষে কর্মীরা বাড়ি ফেরার পথে বিভিন্ন স্থানে হামলা করছে। তারা নারী কর্মীদের আক্রমণ করছে। ভোটের পর গুম-খুনের হুমকি দিচ্ছে। জমি ও বাড়ি দখল করে এলাকা ছাড়া করা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। লাঙল প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। পুনরায় লাগাতে গেলে কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা থানায় গেলে অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো যারা সন্ত্রাসী তাদের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সাধারণ ভোটারদের ও ভুক্তভোগীদের হয়রানি করছে। ’

লিখিত অভিযোগে তৃণমূল বিএনপির তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপি থেকে মনোনীত প্রার্থী। অন্যান্য প্রার্থীদের ন্যায় আমিও প্রচার প্রচারণায় অংশ নিয়েছি। কিন্তু স্থানীয় সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর নিয়ন্ত্রিদ সন্ত্রাসী বাহিনীরা আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটপ্রদানে নিরুৎসাহিত করছে তারা। বাধা দিলেই নেমে আসছে নানা ধরনের হুমকি ধামকি।

তিনি অভিযোগ করেন, গাজীর লোকেরা হুমকি দিয়ে ভোটারদের বলছে গাজী জিতলে তাদের বাড়িছাড়া করা হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এদিকে ইসির কাছে করা অভিযোগে স্বতন্ত্র কেটলি প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া দাবি করেন, নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে আমি এবং আমার সমর্থকরা প্রতিনিয়ত নৌকার গোলাম দস্তগীর গাজীর সন্ত্রাসীদের বাছে বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। এমতাবস্থায় আমাদের প্রচার প্রচারণা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে আমার প্রচারণায় অংশ নেয়া এক নারীর ওপর হামলা করেছে গাজীর সমর্থকরা।

অভিযোগ করে এই প্রার্থী আরও বলেন, আমার কর্মী সমর্থকদের প্রতিনিয়ত হামলা ও হুমকি দেয়া হচ্ছে। আর এই হামলার নেতৃত্বে রয়েছেন কায়েতপাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রংধনু গ্রুপের রফিকুল ইসলাম। শুধু হামলাই নয় আমার কর্মী সমর্থদের বাড়িতেও হামলা ও অগ্নিসংযোগ করছে রফিকের সন্ত্রাসী বাহিনী।

লিখিত অভিযোগের শেষে এ তিন প্রার্থীই নির্বাচন কমিশনের কাছে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, কমিশন এ বিষয়ে দৃষ্টি না দিলে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তারা দ্রুততম সময়ে নারায়ণগঞ্জের এসপি ও রূপগঞ্জের ওসির প্রত্যাহার দাবি করেন।

এই রকম আরও টপিক