ভাগ-বাঁটোয়ারার নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে হাস্যরস চলছে: মঈন খান

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান

ভাগ-বাঁটোয়ারার নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে হাস্যরস চলছে: মঈন খান

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ৭ জানুয়ারির একতরফা ও ভাগ-বাঁটোয়ারার নির্বাচনকে নিয়ে দেশে-বিদেশে হাস্যরস ও সমালোচনা চলছে।  আজ শুক্রবার সকালে তাঁর বাসভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মঈন খানের পাশে এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।  এই বিএনপি নেতা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়।

সেখানে আলোচ্য বিষয় এবং নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলন।

মঈন খান অভিযোগ করে বলেন, সরকার নিজ দায়িত্বে ও মরিয়া উদ্যোগে প্রতিদিন সেটিকে প্রহসন ও সহিংসতার নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে। ডামি প্রার্থী ও ডামি দল উৎপাদন করেই ক্ষান্ত হয়নি, এখন তারা নজর দিয়েছে জোরপূর্বক ডামি ভোটার সৃষ্টিতে। এছাড়া জবরদস্তিমূলক কৌশলে অনেক জায়গায় সরকারি ভাতাভোগীদের কার্ড জব্দ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জনসম্মুখে ভোট না দিলে সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা তাঁদের কার্ড আর ফেরত পাবেন না বলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমেও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ধরনের ভাতাভোগীকে ভোট প্রদানে বাধ্য করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন শীতের মধ্যেই বৃষ্টির খবর দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর

মঈন খানের আরও অভিযোগ, সারা দেশের প্রায় ২০ লাখ সরকারি চাকরিজীবীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ানোর প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তে প্রশাসনের বিশাল অংশজুড়ে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের ভোটাধিকার নিয়ন্ত্রণের এই অপপ্রয়াস নির্বাচনী প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে দেশে-বিদেশে গুরুতর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান আরও বলেন, নিশিরাতের এমপিরা দেশজুড়ে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন ভোটকেন্দ্রে না গেলে লাখ লাখ সুবিধাভোগী মানুষ তাঁদের আর্থিক সুবিধা হারাবেন। বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ মানুষ বিভিন্ন সামাজিক সুবিধা পাচ্ছেন। যা যুগের পর যুগ ধরে সব সরকারের অধীন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এসব সুবিধাভোগী ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তত্ত্বাবধানে এলাকায় এলাকায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে, ৭ জানুয়ারি ভোট না দিলে তাঁদের ভাতা বাতিল করে দেবে।

ভোটারদের উদ্দেশে লিখিত বক্তব্যে মঈন খান আহ্বান জানান, ‘আপনারা এই অবৈধ সরকারের হুমকি- ধমকি সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করুন। যে বা যাঁরা আপনাকে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করছেন, তাঁদের নাম সংরক্ষণ করে রাখুন। ’

লিখিত বক্তব্যে বিএনপি নেতা মঈন খান বলেন, ‘বিএনপি ও ৬২টি গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি তথাকথিত নির্বাচনকে একযোগে বর্জন ও প্রত্যাখ্যান করেছেন দেশের সব শ্রেণি-পেশার ভোটার, বিবেকবান ও সচেতন প্রত্যেক নাগরিক। দিশাহারা হয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে বানরের পিঠা ভাগাভাগির এই ধিক্কৃত আয়োজনকে অবৈধ সরকার “অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন” হিসেবে দেখাতে চাচ্ছে। তাই আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রযন্ত্রের চিহ্নিত অংশ মিলে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা তৈরি করেছে। ’

মঈন খান বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে অনুষ্ঠেয় অর্থহীন নির্বাচনে কৃত্রিম ভোটার উপস্থিতি দেখাতে জনবিচ্ছিন্ন সরকার যেভাবে সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছে, তা নৈতিকভাবে গণবিরোধী ও রাজনৈতিকভাবে শিশুসুলভ। তাদের পরিকল্পিত অপপ্রয়াসে কেবল বাংলাদেশের ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ন হচ্ছে না, নির্বাচন নামের অতি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিষয়টি হয়ে উঠেছে শোষকগোষ্ঠীর নির্লজ্জতা ও দেউলিয়াত্বের প্রতীক। ভোটারসংখ্যা বাড়িয়ে দেখাতে তাদের সব অপকৌশলের ফিরিস্তি আজ আন্তর্জাতিক অংশীজনদের কাছে সুস্পষ্ট, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদে।

news24bd.tv/কেআই