ভূটানে চলছে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তির নির্বাচন

সংগৃহীত ছবি

ভূটানে চলছে অর্থনৈতিক সংকট থেকে মুক্তির নির্বাচন

অনলাইন ডেস্ক

মাত্র ১৫ বছর আগে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়া ভূটানে চলছে চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় দেশটিতে ভোটাভুটি শুরু হয়, এবং এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশটির নাগরিকেরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সুযোগ প্রাপ্তির লক্ষ্যে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিচ্ছে।  

মঙ্গলবারের নির্বাচনে ভূটানের পাঁচ লাখ ভোটার মোট ৯৪ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে ৪৭ জন আইনসভা সদস্য নির্বাচিত করবে। নির্বাচনে লড়াই হচ্ছে মূলত ভূটান টেন্ড্রেল পার্টি (বিটিপি) এবং পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) মধ্যে।

নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রাইমারীতে পিডিপি জয়লাভ করেছিল।  

বিকাল পাঁচটায় ভোটাভুটি সম্পন্ন হবে এবং বুধবার (১০ জানুয়ারি) নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যাবে।  

৪৯ বছর বয়সী ভোটার কারমা রয়টার্সকে জানান, ভূটানের নাগরিকদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নিজেদের উন্নয়ন সাধন করা। অনেক ব্যক্তি বেকার রয়েছেন এবং যারা চাকরি করছেন তারাও তাদের পরিবারের ভরণপোষণে হিমশিম খাচ্ছেন।

গত নির্বাচনের পর থেকে ভূটানের অসংখ্য তরুণ নাগরিক উন্নত জীবনের খোঁজে অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোতে পাড়ি জমিয়েছেন। ২০২২ এর জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার ভূটানের নাগরিক অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পেয়েছেন, যা এর আগের ছয় বছরে প্রাপ্ত মোট ভিসার সমপরিমাণ এবং ভূটানের মোট নাগরিকের প্রায় ২ শতাংশ।

২০০৮ সালে ভূটানে সর্বপ্রথম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলই ভূটানকে সুখ এবং জনগণের সুস্বাস্থ্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দূর্বল হয়ে পড়া অর্থনীতি এবং অভিবাসনের উচ্চ হার ভূটানের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিটিপির নেতা এবং সরকারি আমলা পেমা চিউয়াং জানান, ভূটান তাদের সেরা সন্তানদেরকে হারাচ্ছে। এর বিপরীতে পিডিপির নেতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শারিং টবগায় অর্থনীতির ভেঙ্গে পড়া এবং অভিবাসনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

পিডিপির ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়, প্রতি আটজনের মধ্যে একজন তাদের মৌলিক চাহিদা পূরন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

উভয় দলই ভূটানের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কোভিড নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর থেকে দেশটি বৈদেশিক সহায়তা এবং ভ্রমন বাণিজ্যের ক্ষেত্রে খুব একটা সফলতার মুখ দেখেনি।

উভয় দলই ভূটানের জলবিদ্যুত প্রকল্পকে সমৃদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি, কৃষিখাতের আধুনিকায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি নিরসনে কাজ করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছে দল দুটি।  

উভয় দলই বিনিয়োগ এবং রিজার্ভ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবমতে, অক্টোবরের শেষ নাগাদ ভূটানের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৬৪ মিলিয়ন ডলার।

তবে সমালোচকেরা দুই দলের প্রতিশ্রুতিগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষক সোনাম শারিং রয়টার্সকে জানান, মানুষ যা শোনে তাই আর এখন বিশ্বাস করে না কারণ অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অনেক ওয়াদাই পূরণ করেনি।

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো দলই টানা দুইবার ক্ষমতায় আসেনি। ২০২২ সালে একজন সাবেক আমলা কর্তৃক বিটিপি প্রতিষ্ঠিত হয়, অপরদিকে ২০০৭ সালে শারিং টবগায় পিডিপি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০১৩ সালের নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতায় আসেন।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক