সাতক্ষীরায় এমপিসহ ২৩ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

সংগৃহীত ছবি

সাতক্ষীরায় এমপিসহ ২৩ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার ৪টি সংসদীয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী ৩০ প্রার্থীর মধ্যে এমপিসহ ২৩ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে ওয়ার্কাস পার্টি ও আওয়ামী লীগসহ দুই সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির তিন প্রার্থী রয়েছে। তবে সাবেক দুই সংসদ সদস্য প্রতীক বরাদ্দের পর ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।

৭ জানুয়ারি সাতক্ষীরায় শাপিূর্ণভাবে জেলার ৪টি অসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি ও তাদের মিত্রদল জামায়াতসহ সমমনা জোটের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন প্রত্যাখান করলেও সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনে ১০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ২২ জন প্রার্থী ও ৮ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৩০ জন প্রতিদ্বদ্বিতা করেন। এর মধ্যে ২৩ জনের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।  

এরা হলেন- সাতক্ষীরা-১ আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি’র মনোনীত হাতুড়ি প্রতীকের প্রার্থী টানা দুই বারের এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ পেয়েছেন ৪৩১ ভোট ও সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান পেয়েছেন ৩৫৩ ভোট। বাংলাদেশ কংগ্রেসের ডাব প্রতীকের প্রার্থী ইয়ারুল ইসলাম পেয়েছেন  ৮৩৫ ভোট, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আশ প্রতীকের প্রার্থী সুমি পেয়েছেন ৪৪২ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী শেখ মো. আলমগীর পেয়েছেন ২৩৫ ভোট, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ নুরুল ইসলাম ট্রাক প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫৯৪৮ ভোট এবং জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের নেতা এস এম মুজিবুর রহমান ওরফে সরদার মুজিব স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দোলনা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৭০৮ ভোট, স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মো. নুরুল ইসলাম ২০৮ ভোট পেয়েছেন।

এ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ স্বপন ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তার নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ দিদার বখ্ত পেয়েছেন ২৬ হাজার ৮২১ ভোট। এ আসনে ৪ লক্ষ ৭২ হাজার ৪৩ জন ভোটের মধ্যে ২ লক্ষ ২ হাজার ১২৫ জন ভোট দিয়েছেন। এ আসনে ভোটাধিকার প্রয়োগ হয়েছে ৪২.৮ শতাংশ।

সাতক্ষীরা-২ আসনে তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা ফারহান মেহেদী পেয়েছেন ৩০৩ ভোট, ন্যাশনাল পিপিলস পার্টির (এনপিপি) আম প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ৯৩৮ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান বুলু ৭২৫ ভোট, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী কাঁচি প্রতীকের এনছান বাহার বুলবুল পেয়েছেন ৪৮০ ভোট । যদিও তিনি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে লিফলেট-ব্যানার ছাপানো ও কোন প্রকার প্রাচর-প্রচারণা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। বরং তিনি লাঙ্গলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে প্রচার অভিযানে অংশ নেন। স্বতন্ত্র ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মো. আফসার আলী পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৯৪ ভোট। এই আসনে জাতীয় পাটি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুজ্জামান আশু ৮৮ হাজার ৩৫৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বর্তমান সংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে ঈগল প্রতীক নিয়ে লড়ে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৪৮৭ ভোট। এ আসনে ৪ লক্ষ ৬০৮ জন ভোটের মধ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৬৪৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যা শতকারা হারে ৩২ শতাংশ।

সাতক্ষীরা-৩ আসনে ন্যাশনাল পিপিলস পার্টি (এনপিপি) আম প্রতীকের মো. আব্দুল হামিদ পেয়েছেন ৪ হাজার ১৮৩ ভোট, জাতীয় পাটি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. আলিফ হোসেন পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৭৩, জাকের পাটির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মো. মঞ্জুর হোসেন ১৮৫৫ ভোট, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকর নিয়ে রুবেল হোসেন পেয়েছেন ৮৪৭ ভোট এবং বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) এর প্রার্থী শেখ তরিকুল ইসলাম চাকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭৭৮ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক ১ লাখ ৭৩ হাজার ৮৭৩ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। এ আসনে ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৮০ জন ভোটের মধ্যে ২ লক্ষ ২ হাজার ৮৪ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। যা শতকারা হারে ৪৭ শতাংশ।

সাতক্ষীরা-৪ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী ডাব প্রতীক নিয়ে শফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১ হাজার ৩২, ন্যাশনাল পিপিলস পার্টি (এনপিপি) প্রার্থী শেখ ইকরামুল আম প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৯৩ ভোট, স্বতন্ত্র কাচি প্রতীকের মো. মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৫৮২ ভোট, তৃণমূল বিএনপির সোনালী আঁশ প্রতীকের আসলাম আল মেহেদী পেয়েছেন ৫০৯ ভোট ও জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. মাহবুবর রহমান পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৩৯ ভোট, এই আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সদ্য সাবেক শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) এর নোঙ্গর প্রতীকের প্রার্থী সাবেক জাতীয় পাটির হুইপ ও সাবেক এমপি এইচএম গোলাম রেজা পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৮৮ ভোট। এ আসনে ৪ লক্ষ ৪২ হাজার ১৯৩ জন ভোটের মধ্যে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ২৩৫ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এ আসনে ভোটাধিকার প্রয়োগ হয়েছে ৪২ শতাংশ।