রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মাঝে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময়ের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউক্রেনসহ বিশ্ব রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়া প্রায় ৫০টির মতো দেশ। তাদের মতে এ অস্ত্র বিনিময় উত্তর কোরিয়ার ওপরে আরোপিত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার বরখেলাপ ঘটিয়েছে। খবর আল জাজিরার।
এক যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশ অস্ত্র বিনিময়ের এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং অস্ত্রগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারির মধ্যবর্তী সময়ে ব্যবহৃত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এসকল অস্ত্র বিনিময়ের ফলে ইউক্রেনের জনগণের দূর্দশা বৃদ্ধি পাচ্ছে, রাশিয়ার আগ্রাসনকে সমর্থন দেয়া হচ্ছে এবং বৈশ্বিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি, অস্ত্র বিনিময়ের ফলে উত্তর কোরিয়া গুরুত্বপূর্ণ কারিগরী এবং সামরিক তথ্য পেয়ে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অস্ত্র বিনিময়ের ফলে ইউরোপ, কোরিয়া উপদ্বীপ, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার ব্যাপারে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি জানান, উত্তর কোরিয়া থেকে প্রাপ্ত অস্ত্রগুলো রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনে ব্যবহৃত হয়েছে।
অস্ত্র বিনিময়ের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
২০২২ সাল থেকেই রাশিয়া উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে ইউক্রেনে ব্যবহারের জন্য অস্ত্র কিনতে চায় মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয়ে আসছিলো।
২০২৩ সালের আগস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড সংস্থাটিকে জানান, প্রচুর পরিমানে অস্ত্র এবং গোলাবারুদ বিনিময়ের ব্যাপারে রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মাঝে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
আশঙ্কাগুলো সত্য হতে শুরু করে যখন সেপ্টেম্বর মাসে ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং উন রাশিয়ার একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রে বৈঠকে মিলিত হন। পাঁচ ঘন্টাব্যাপী এ বৈঠকে পুতিন কিমকে জায়গাটি ঘুরিয়ে দেখান এবং বলেন রাশিয়া উত্তর কোরিয়াকে স্যাটেলাইট বানানোর কাজে সাহায্য করবে। বিনিময়ে কিম পুতিনকে জানান ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ন্যায়সঙ্গত যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে উত্তর কোরিয়া অস্ত্র সরবরাহ করবে।
পরবর্তীতে কিম রাশিয়ার অস্ত্র কারখানাগুলো ঘুরে দেখেন এবং রাশিয়ার অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্রশস্ত্র পর্যবেক্ষণ করেন।
দুই মাস পরেই কিম সফলভাবে গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ঘোষণা দেন এবং ২০২৪ সালে আরও তিনটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
news24bd.tv/ab