শপথ অনুষ্ঠানে পিটার হাস

শপথ অনুষ্ঠানে পিটার হাস

অনলাইন ডেস্ক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ না মানলেও মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বঙ্গভবনে উপস্থিত হন তিনি। এরপর অন্যান্য অতিথির সঙ্গে তিনি বঙ্গভবনের দরবার হলে আসন গ্রহণ করেন।

জাতীয় নির্বাচনের পরপরই শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে দ্রুততার সাথে ভারত, চীন এবং রাশিয়াসহ অনেকগুলো দেশ অভিনন্দন জানালেও ভিন্ন পথে হাঁটে যুক্তরাষ্ট্র।

তারা বলে, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো একই সূর দেখা যায় যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ কিছু পশ্চিমা দেশের। তবে বিবৃতিতে যাই বলুক নতুন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন হাস।
 
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ।

এ ছাড়া স্বতন্ত্রদের মধ্যে বিজয়ী হন ৬২ জন, যাদের মধ্যে ৫৯ জন আওয়ামী লীগেরই নেতা। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। একটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।

গত ৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পরদিন ১০ জানুয়ারি (বুধবার) শপথ নেন নবনির্বাচিত এমপিরা। আর এমপিদের শপথ গ্রহণের একদিন পর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) শপথ নিচ্ছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।

এদিকে নির্বাচনের আগে-পরে পুরো সময় জুড়ে আলোচনায় ছিলেন ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি দফায় দফায় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অপরদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সরকারবিরোধীদের উস্কানি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে মার্কিন সরকার।

অবশ্য নির্বাচনের আগের মতো অতটা উত্তাপ এখন দেখা যাচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের সুর কি কিছুটা নরম?

নির্বাচনের পর পশ্চিমা কিছু দেশ গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তাদের সুর নির্বাচনের আগের তুলনায় এখন কিছুটা নরম।

নির্বাচন নিয়ে দেয়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গঠন, মানবাধিকার ও বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দেয়ার পরিবর্তে ইন্দো প্যাসিফিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নিয়ে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। ফলে তারা যে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে সেটা ধারণা করা যায়।

বিরোধী দলের কর্মীর গ্রেফতার এবং নির্বাচনের দিনের অনিয়মের প্রতিবেদন নিয়ে উদ্বেগ জানালেও পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, বাংলাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।

নির্বাচন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া বিবৃতিতেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড বলেছে, লাখ লাখ বাংলাদেশি ভোটার নির্বাচনের দিন নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বিষয়টিকে আমরা স্বাগত জানাই। নির্বাচনের আগে ঘটে যাওয়া সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ জানালেও তারা বলেছে, ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া একটি উন্মুক্ত, স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চলের জন্য অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন শেখ হাসিনা 

news24bd.tv/তৌহিদ