ফিলিস্তিনিরা যদি একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে তবে তা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বয়ে আনলেও ইরানকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। খবর আল জাজিরার।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ এল-সিসির সাথে সাক্ষাতের পর গণমাধ্যমের সাথে আলাপচারিতায় ব্লিঙ্কেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সামনে দুটি রাস্তা রয়েছে। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব বিশ্বের কাছ থেকে নিরাপত্তার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সুসংহতিকরণ এবং একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে যাত্রা।
দ্বিতীয়ত, ইরান সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী কর্তৃক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে থাকা। যদি প্রথম পথ অনুসরণ করা হয় তবে ইরানকে কোনঠাসা করে ফেলা যাবে।ব্লিঙ্কেন এমন সময়ে মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমন করলেন যখন মিসর এবং জর্ডান ইসরায়েলের সামরিক অভিযান যাতে ফিলিস্তিনিদেরকে উৎখাত না করে কিংবা ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিন যাতে দখল না হয়ে যায় সেজন্য পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
গাজায় চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ যাতে সমগ্র অঞ্চলে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ব্লিঙ্কেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতারসহ বেশকিছু মিত্র রাষ্ট্রের প্রধানদের সাথে দেখা করেছেন।
গত তিন মাস ধরে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে লেবাননের সাথে দেশটির সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি বিনিময় ঘটে চলেছে। যদিও এ গোলাগুলি শুধুমাত্র সীমান্তেই সীমিত রয়েছে, কিন্তু গত মাসে বৈরুতে এক ইসরায়েলি হামলায় হামাসের সিনিয়র এক নেতা এবং কয়েকজন হিজবুল্লাহ সদস্যের হত্যার ফলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটির পশ্চিমা মিত্রদের হুঁশিয়ারির পরেও লোহিত সাগরে চলমান জাহাজসমূহে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথি। বুধবার (১০ জানুয়ারি) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক গৃহীত এক প্রস্তাবনায় হুথিকে হামলা বন্ধ করতে আহ্বান জানানো হয়।
গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর থেকে সিরিয়া এবং ইরাকেও মার্কিন সৈন্যরা হামলার স্বীকার হতে শুরু করেছে। গত সপ্তাহে ইরাক সরকার বাগদাদে একটি ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে হামলা চালিয়ে কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তিকে হতাহত করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছে।
এবারের মধ্যপ্রাচ্য সফরে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরব দেশগুলোকে সংঘাত বন্ধে নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রন করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি, ইসরায়েলকে বেসামরিক ব্যক্তিদের হত্যা বন্ধ করতেও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলকে গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।
মিসরে যাওয়ার আগে ব্লিঙ্কেন পশ্চিম তীরের রামাল্লায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে দেখা করেছেন। এ সময় ব্লিঙ্কেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ন সমর্থনের বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং যুদ্ধ শেষে গাজার দায়িত্ব নিতে আব্বাসকে অনুরোধ করেন।
ইসরায়েল ব্লিঙ্কেনের এই প্রস্তাবে অসম্মতি জানিয়েছে এবং যুদ্ধপরবর্তী গাজার শাসনব্যবস্থার বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে।
news24bd.tv/ab