ধারের টাকা তুলতে পাওনাদারের হালখাতার আয়োজন!

ধারের টাকা তুলতে ব্যতিক্রম হালখাতার আয়োজন

ধারের টাকা তুলতে পাওনাদারের হালখাতার আয়োজন!

হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম: 

নিজের প্রতিবেশি ও বন্ধুদের মধ্যে টাকা ধার দিয়ে আদায় করতে না পারায় এই ব্যতিক্রম হালখাতার আয়োজন করে সাড়া ফেলে দিয়েছে কুড়িগ্রামের এক শিক্ষক।

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হাল-খাতা। সারা বছর বেচা কেনার পর বছর শেষে বাকি টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন করে থাকে ছোট-বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এমনকি এই হালখাতায় এখন যুক্ত হয়েছে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নদ-নদী ঘাট পর্যন্ত।

প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের হালখাতার চিঠি দিয়ে অনুষ্ঠানের দিন তারিখ জানিয়ে দেয়া হয়। এসব ছাড়িয়ে হাল খাতায় এবার যুক্ত হয়েছে ব্যক্তিগত ধারের বা হাওলাত দেয়া টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়া।  

হালখাতার মাধ্যমে ধারের টাকা তোলার এই নতুন ধারণার সৃষ্টি করেছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় এমএএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল। ইতিমধ্যে হাতে করে এবং ফেসবুকের মাধ্যমে দেনাদারদের কাছে হাল খাতার চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।

সেই মোতাবেক ১২ জানুয়ারি হালখাতা অনুষ্ঠিত।  

আরও পড়ুন:  মডেলের মরদেহ মিলল খালে 

এরকম একটা চিঠি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই হালখাতা আয়োজনে তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা- সমালোচনা।

চিঠিতে তিনি দেনাদারদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। লিখেছেন আপনাদের টাকা হাওলাত দিয়ে আমি আনন্দিত। ১২ জানুয়ারি হালখাতার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত হালখাতায় আপনি উপস্থিত হয়ে ঋণ পরিশোধ করে ঋণ মুক্ত থাকুন। এই ঋণ পরিশোধের হালখাতায় ৩৫জন দেনাদারের নিকট ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা পেতে হালখাতার চিঠি দেন ওই শিক্ষক। এসব মানুষের মাঝে বেশির ভাগই ওই শিক্ষকের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনসহ কাছের মানুষজন। এমন ব্যতিক্রম চিঠি পেয়ে অনেকেই হতভম্ব হলেও পরে বুঝতে পারে ধারের টাকা ফেরত দিতে দেরি হওয়ায় এমন আয়োজন করে ওই শিক্ষক।

প্রায় তিন বছর যাবত বন্ধু-বান্ধব ও নিকট জনরা বিভিন্ন সময়ে টাকা ধার নিলেও সময় মতো তা ফেরত দেয়নি। ফলে ব্যবসায়িক বন্ধুর হালখাতা দেখে নিজেই এমন ব্যতিক্রম আয়োজনের চিন্তা মাথায় আসে। হালখাতার চিঠি পেয়ে অনেকেই আগেই টাকা পরিশোধ করেছে আবার অনেকেই হালখাতা খেয়ে টাকা পরিশোধ করছে। এতে করে সবার সাথে সৌহার্দ সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় সবাই খুশি।

আব্দুল আউয়াল জানান, বাংলাদেশে এমন ব্যতিক্রম আয়োজন এই প্রথম। উৎসুক মানুষজনও দেখতে এসেছে। এই আয়োজন থেকে সবারই শিক্ষণীয় ব্যাপার আছে ঋণ গ্রহীতা এবং ঋণদাতা উভয়ের মধ্যে সচেতনতা এবং সুসম্পর্ক স্থাপন গড়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

news24bd.tv/কেআই

এই রকম আরও টপিক