রূপগঞ্জের নাওড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের ১০ হাজার কম্বল বিতরণ

শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে

রূপগঞ্জের নাওড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের ১০ হাজার কম্বল বিতরণ

অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নে অসহায়, দুস্থ ও শীতার্তদের মধ্যে ১০ হাজার কম্বল বিতরণ করেছে দেশের শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপ।

আজ সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ইউনিয়নের নাওড়া হাজি ইয়াদ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে এ কম্বল বিতরণ করা হয়।

কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পরিচালক ও কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট প্রোপার্টি ডেভেলাপমেন্ট লিমিটেড-এর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. লিয়াকত হোসাইন, বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবু হেনা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আমরা এখানে ব্যবসা করার জন্য আসিনি। আমরা এসেছি আপনাদের পাশে থাকার জন্য, আপনাদের সহযোগিতা করার জন্য। আপনাদের ভালো রাখার জন্য। আমরা জায়গা দখল করার জন্য আসিনি।

বসুন্ধরা গ্রুপ কারও জায়গা দখল করে না। প্রকৃত দাম দিয়ে কিনে নেয়, তাও যদি কেউ বিক্রি করতে চায় তবে। এখানে জোরাজুরির কিছু নেই। বসুন্ধরা গ্রুপ মানুষ ঠকানোর কাজ করে না, এটা আপনাদের জোর গলায় বলে গেলাম। বসুন্ধরা গ্রুপ এ এলাকার মানুষদের ভালো রাখতে চায়। বসুন্ধরা গ্রুপ যে শুধু আজকে এ এলাকায় কম্বল বিতরণ করছে এমন না। আজকের দিনে রংপুরে ২৫ হাজার, কুষ্টিয়াতে ১০ হাজার কম্বল এবং সারাদেশে যেখানেই মানুষের কষ্ট হচ্ছে সেখানে ২ লাখ কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আপনারা বসুন্ধরা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন না। আজকে কিছু কথা বলি। করোনার সময় আমাদের চেয়ারম্যান স্যার বললেন, উত্তর বঙ্গের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে কি করবেন? তখন আমি বললাম, খাদ্য সহায়তা দিতে চাই। তখন আমাদের একটি সংগঠন রয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ, যে সংগঠনে সারাদেশে প্রায় ২০ লাখ ছেলে মেয়ে কাজ করে। তাদের মাধ্যমে আমরা সব শুভ কাজ করাই। আমাদের স্লোগান হচ্ছে ‘শুভকাজে সবার পাশে’। আমরা ভালো কাজে সবার পাশে থাকতে চাই। করোনার সময় চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশনায় আমরা উত্তর বঙ্গের ১৬টি জেলায় ৪৮ হাজার পরিবারকে একমাসের খাদ্য সহায়তা দিয়েছিলাম। যেখানে ২৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। বাংলাদেশে এমন কোনো শিল্প গ্রুপ নেই যারা সহায়তার জন্য একমাসে এত টাকা খরচ করে। আমরা এখনও প্রতিমাসে ২৩ থেকে ২৪ কোটি টাকা মানুষের সহায়তায় খরচ করছি।

ইমদাদুল হক মিলন বলেন, বসুন্ধরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে, মানুষের ভালোর জন্য কাজ করে। অতীতে এ এলাকায় বসুন্ধরার নাম ভাঙিয়ে অনেকে অনেক রকম করে গেছে। আপনারা যেকোনো বিষয়ে সরাসরি বসুন্ধরার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। বসুন্ধরায় কোনো মাঝের লোক নেই। সরাসরি বসুন্ধরার চেয়ারম্যান, আমরা যারা আছি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমরা সারাদেশের অসহায় মানুষের মতো আপনাদের পাশেও আছি। আমরা সারাদেশে ৫০টি স্কুল করেছি যেখানে গরিব শিক্ষার্থীরা পড়ে। তাদের জামা-কাপড়, বই-খাতা সব দেই। আমরা ৫০টির বেশি ট্রেনিং সেন্টার করেছি যেখানে অনেক নারীরা সেলাই শেখেন। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর প্রত্যেক নারীকে একটা করে সেলাই মেশিন উপহার দেই। যা দিয়ে তারা সচ্ছল হওয়ার চেষ্টা করে। আমরা বাঞ্ছারামপুর এলাকায় প্রায় ৭০ হাজার অসহায় নারীকে বিনাসুদে ঋণ দিয়ে সাবলম্বী করেছি।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের যেকোনো অসুবিধায় আপনারা সরাসরি আমাদের বসুন্ধরায় চলে যাবেন। আপনাদের টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারলে, ছেলে মেয়েরা পড়তে না পারলে আসেন পড়াশোনার দায়িত্ব আমরা নেব। এ এলাকার একটা ছেলে বা মেয়ে টাকার অভাবে পড়তে পারবে না, এমনটা হবে না। দরকার হলে বসুন্ধরা গ্রুপ এ এলাকার দুই হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা ব্যয় বহন করবে। আমরা বর্তমানে সাত থেকে ১০ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ার খরচ দেই। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে প্রতিমাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে প্রত্যেকের কাছে পৌঁছে যায়। আমরা শত শত মানুষের চিকিৎসা করাই। দরকার হলে আপনারা খবর নেন, চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য সবার পাশে দাঁড়াই কিনা। আমরা ব্যবসার জন্য সব জায়গায় যাই না। আমরা ব্যবসার বাইরে যে কাজগুলো করি তা প্রচার করি না। অনেকে অল্প কাজ করে অনেক প্রচার করে। আজকে অল্প করে বললাম। বসুন্ধরা গ্রুপ মানুষের পাশে কতভাবে দাঁড়ায় তা বলতে গেলে এক ঘণ্টায়ও শেষ করা যাবে না।

বক্তব্যের শেষে তিনি আবারও যেকোনো প্রয়োজনে কায়েতপাড়া বাসিন্দাদের পাশে বসুন্ধরা গ্রুপ আছে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের কাছে এসে একবার শুধু দাঁড়াবেন যে আমার সংসার চলে না, চাকরি নেই, চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা করাতে পারছেন না কেউ খালি হাতে ফিরবেন না। আপনারা বসুন্ধরার সঙ্গে থাকবেন, বসুন্ধরা আপনাদের সঙ্গে থাকবে। আপনাদের সব ভালো মন্দ বসুন্ধরা দেখবে।

কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানের শুরুতে নাওড়া হাজী ইয়াদ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশাররফ ভূঁইয়া বলেন, কঠিন শীতের সময় কম্বল বিতরণ বসুন্ধরা গ্রুপের সঠিক সিদ্ধান্ত। কিছু মানুষ বসুন্ধরার নামে জায়গা দখল করছে। নামটাও সবার জানা, সে হচ্ছে আন্ডা রফিক। এ পক্ষ এতদিন বসুন্ধরার ত্রাণ নিজের নামে চালিয়েছে। এখন আর সেই সুযোগ নেই।

news24bd.tv/SHS