৫৫ দিনে চাষির ঘরে উঠবে আলু

মাত্র ৫৫ দিনের মধ্যে আলু ঘরে তুলতে পারবে চাষিরা। এমন আলুর জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেবীগঞ্জ প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্র।

৫৫ দিনে চাষির ঘরে উঠবে আলু

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

মাত্র ৫৫ দিনের মধ্যে আলু ঘরে তুলতে পারবে চাষিরা। এমন আলুর জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেবীগঞ্জ প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্র। তাপ সহনশীল এই জাতের আলু আগাম চাষ করে বাজারজাত করতে পারবে চাষিরা।

এই অঞ্চলের কৃষকেরা বারি আলু-৪৪ এবং বারি আলু-২৯ চাষে অভ্যস্ত।

প্রচলিত এসব জাতের আলুর চেয়েও পরিপক্ক এবং অধিক ফলনশীল জাতের আলু অবমুক্ত করা হয়েছে। এসব জাতের আলু চাষ করে কৃষক মাত্র ৫৫ দিনে মাঠ থেকে উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করে কাঙ্খিত  মূল্য পেতে পারেন।

সম্প্রতি বারি থেকে অবমুক্ত হওয়া জাতগুলোর মধ্যে বারি আলু-৭৯,  বারি আলু-৮৬, বারি আলু-১০০, বারি আলু-১০২ এর আগাম চাষ মূল্যায়ন পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিজ্ঞানীরা। চাষীরা এই জাতগুলো থেকে প্রত্যাশিত আগাম ফলন পাবেন।

আগাম বীজের উৎপাদন মুল্যায়ন পরীক্ষায় যুক্ত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আব্দুল হালীম বলেন, এ বছর ১১টি অগ্রবর্তী লাইনের সাথে বারি অবমুক্ত ৭টি ভ্যারাইটি এবং ৩টি চেক ভ্যারাইটির তুলনামূলক মুল্যায়ন পরীক্ষার জন্য মাঠপর্যায়ে স্থাপন করা হয়েছিল। যেগুলোর মধ্যে অগ্রবর্তী লাইন থেকে ৩ টি এবং রিলিজ ভ্যারাইটিগুলোর মধ্যে বারি আলু -৮৬, বারি আলু-১০০ ও ১০২ জাতগুলো অত্র অঞ্চলে প্রচলিত জাত থেকে ভালো ফলন দিয়েছে।

এই পরীক্ষার সাথে নিবিড়ভাবে যুক্ত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোসাদ্দেকুর রহমান রাহি বলেন, আমরা আগাম আলুর গবেষণা করছি প্রচলিত আলুর জাতের চেয়েও আগাম ও উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু প্রাপ্তির লক্ষ্যে। উৎপাদিত জাতগুলো থেকে প্রতি হেক্টরে ১২-১৫ মেঃ টন আলু উৎপাদন সম্ভব। এছাড়াও ভবিষ্যতে রোগ বালাইয়ের আক্রমণসহ বিভিন্ন কারনে প্রচলিত জাতগুলোর গুণগত মান হারিয়ে গেলে চাষীরা যেন আগাম আলুর জাত সংকটে না পড়ে সেজন্য এই গবেষণা। আমরা আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ও তাপ সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে বদ্ধ পরিকর।

দেবীগঞ্জ প্রজনন বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ. কে. এম. খোরশেদুজ্জান বলেন, এই ফার্মটি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান। দেশের কৃষি খাতে ভালো কিছু করার জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে এখানে। এখানে আমাদের বিজ্ঞানীরা দিনরাত পরিশ্রম করে নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কাজ করছে। গবেষণার এ ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা পূরণে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের এই প্রতিষ্ঠানটির জমির পরিমান ৪০৭ একর। ১৯৮১ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি আলুর উন্নত জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন কন্দাল ফসল গবেষণায় এখানকার ধারাবাহিক সাফল্য কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক