কিয়ামত সম্পর্কে মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী

সংগৃহীত ছবি

কিয়ামত সম্পর্কে মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী

আহমাদ ইজাজ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবিদের যুগের সমাপ্তি কিয়ামতের অন্যতম আলামত। বিভিন্ন হাদিস থেকে বিষয়টি স্পষ্টভাবে জানা যায়।

এক হাদিসে এসেছে, আবু বুরদাহ (রা.)-এর পিতার সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে মাগরিবের সালাত আদায় করলাম। এরপর আমরা বললাম, যদি আমরা তাঁর সঙ্গে এশার সালাত আদায় করা পর্যন্ত বসতে পারতাম (তাহলে ভালো হতো)।

বর্ণনাকারী বলেন, আমরা বসে থাকলাম। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের কাছে এলেন। এরপর বললেন, তোমরা এখানে কতক্ষণ পর্যন্ত বসে আছ? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমরা আপনার সঙ্গে মাগরিবের সালাত আদায় করেছি। এরপর আমরা বললাম যে এশার সালাত আপনার সঙ্গে আদায় করার জন্য বসে থাকব।

তিনি বলেন, তোমরা বেশ ভালো করেছ অথবা (বললেন) তোমরা ঠিকই করেছ। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, এরপর তিনি আসমানের দিকে মাথা উত্তোলন করলেন এবং তিনি অনেক সময়ই তাঁর মাথা আসমানের দিকে উঠিয়ে রাখলেন। এরপর বললেন, তারকারাজি আসমানের জন্য নিরাপত্তা (রক্ষাকবচ) স্বরূপ। যখন তারকারাজি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে তখন আসমানের জন্য প্রতিশ্রুত বিপদ আসন্ন হবে (অর্থাৎ কিয়ামত সংঘটিত হবে)।

যখন আমি বিদায় নেব তখন আমার সাহাবিদের ওপর প্রতিশ্রুত সময় উপস্থিত হবে; অর্থাৎ ফিতনা-ফ্যাসাদ ও যুদ্ধবিগ্রহ শুরু হয়ে যাবে। আর আমার সাহাবিরা গোটা উম্মতের জন্য নিরাপত্তা (রক্ষাকবচ) স্বরূপ। যখন আমার সাহাবিরা বিদায় হয়ে যাবে তখন আমার উম্মতের ওপর প্রতিশ্রুত সময় (কিয়ামত) উপস্থিত হবে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৩৬০)

এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জনগণের ওপর এমন এক সময় আসবে, যখন তাদের বিরাট সৈন্যবাহিনী জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হবে।

তখন তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন কি যিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহচর্য লাভ করেছেন? (অর্থাৎ সাহাবি) তারা বলবে, হ্যাঁ, আছেন। তখন (ওই সাহাবির বরকতে) তাদের জয়ী করা হবে। তারপর জনগণের ওপর আবার এমন এক সময় আসবে যখন তাদের বিরাট সৈন্যবাহিনী (শত্রুদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধে লিপ্ত থাকবে।
তখন তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন কি যিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহচর্য লাভে ধন্য কিংবা কোনো ব্যক্তির (সাহাবির) সাহচর্য লাভ করেছেন? (অর্থাৎ তাবেঈ) তখন তারা বলবে, হ্যাঁ, আছেন। তখন (ওই তাবেঈর বরকতে) তাদের জয়ী করা হবে।

এরপর লোকদের ওপর এমন এক সময় আসবে, যখন তাদের বিরাট বাহিনী জিহাদে অংশগ্রহণ করবে। তখন তাদের জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাদের মধ্যে এমন কি কেউ আছেন, যিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহাবিদের সাহচর্য লাভকারী কোনো বক্তির (তাবেঈর) সাহচর্য লাভ করেছেন? (অর্থাৎ তাবে-তাবেঈ)। বলা হবে, আছেন। তখন তাদের (ওই তাবে-তাবেঈর বরকতে) জয়ী করা হবে। (বুখারি, হাদিস : ৩৬৪৯)

উল্লেখ্য যে ১০০ হিজরি সালে সাহাবিদের যুগ শেষ। সর্বশেষ  সাহাবি ছিলেন আবুত তুফায়েল আমের বিন ওয়াসিলা কেনানি/লায়সি। তিনি ১০০ থেকে ১১০ হিজরি সনের দিকে মৃত্যুবরণ করেন। (আল-বিদায়াহ ৯/১৯০)

এরপর আর কোনো সাহাবি জীবিত ছিলেন না।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক