উপজেলা নির্বাচনে উন্মুক্ত প্রার্থী রাখার কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ

বুধবার বিকালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথসভা হবে। ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা নির্বাচনে উন্মুক্ত প্রার্থী রাখার কথা ভাবছে আওয়ামী লীগ

অনলাইন ডেস্ক

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরপর যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাতে দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দেওয়ার কথা ভাবছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলটির নেতাদের ভাষ্য, তৃণমূলের রাজনীতিতে বিভাজন ঠেকাতে এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় দলীয় প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়ে ভাবছেন তারা।

নৌকা প্রতীকে প্রার্থী দিলেও নেতাকর্মীরা যেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন, এ বিষয়ে দলের ভেতরে আলাপ-আলোচনা চলছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন প্রণয়নের পর থেকে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করে আসছে রাজনৈতিক দলগুলো।

এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিপাকেও পড়তে হয়েছে। অতীতে একজনকে প্রতীক দিলে আরেকজন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন।

তাতে দলীয় শৃঙ্খলা যেমন নষ্ট হয়েছে, তেমনই তৃণমূলে বিভেদ-বিভাজনও সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে বিপাকে পড়তে হয় প্রার্থী বাছাই নিয়ে।

একেক নেতা একেক প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় কোথাও কোথাও পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে গড়িয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে স্থানীয় সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মার্চ মাসে শুরু হয়ে কয়েক দফায় এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলবে। মার্চে প্রথম দফায় শতাধিক উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

দলটির জ্যেষ্ঠ এক নেতা বলেন, “বিএনপি নির্বাচনে না এলে তখন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতারাই দাঁড়িয়ে যায়। যার ফলে তৃণমূল নেতারা অনেক ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন। এ কারণে নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে আওয়ামী লীগ স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে। ”

স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পরিষদের প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। ওই পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। সে অনুযায়ী, এর মধ্যে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের ১০ মার্চ নির্বাচন শুরু হয়ে পাঁচ ধাপে জুনে গিয়ে শেষ হয়।

এবারও পাঁচ থেকে সাত ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা, মার্চে রোজা শুরু ও এপ্রিলে ঈদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনের বিষয়ে চলতি সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে ইসি।

গ্রামীণ জনপদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নের প্রশ্নে উপজেলা পরিষদই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে থাকে। দেশে বর্তমানে ৪৯৫টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। বেশির ভাগ উপজেলার মেয়াদ মার্চ থেকে জুনের মধ্যে শেষ হবে। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনের পদত্যাগের কারণে বেশ কয়েকটি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য।

বুধবার বিকালে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথসভা হবে। সেখানেই স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রশ্নে মতামত নেওয়া হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের এক নেতা জানিয়েছেন।

সবশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদ দুটি উন্মুক্ত রেখেছিল আওয়ামী লীগ।

news24bd.tv/DHL