রূপগঞ্জে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, ৪৪ জনকে আসামি করে মামলা

রূপগঞ্জে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, ৪৪ জনকে আসামি করে মামলা

প্রাণনাশের ভয়ে ২ মূলহোতা মামলার বাহিরে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত ৪৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে প্রাণনাশের হুমকিতে ঘটনার মূলহোতা দুইজনের নাম মামলার এজাহারে উল্লে­খ করেননি ভুক্তভোগী।

বুধবার রাতে ভুক্তভোগী দাউদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ওরফে জাহাঙ্গীর মাস্টার বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলার এজাহার দায়ের করেন।

বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপঙ্কর চন্দ্র সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বুধবার রাতে ইউনিয়ন পরিষদে হামলার ঘটনায় ৪৪ জনের নাম উল্লে­খ করে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানান তিনি।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারের গাড়িসহ অন্তত পাঁচটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এমনকি চেয়ারম্যান কার্যালয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিও ভাঙচুর করে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। ভাঙা হয় কয়েকটি কক্ষের দরজা-জানালা ও এসি। এ সময় অফিসের গোডাউনে থাকা চার বস্তা সরকারি চাল ও তিন বস্তা কম্বল নিয়ে যায় হামলাকারীরা। সিসি টিভি ভাঙচুর করে যন্ত্রাংশ নিয়ে যায় তারা। এ হামলায় চেয়ারম্যানসহ ২০ জন আহত হন।

এছাড়া ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সব মিলিয়ে কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর মাস্টারের অভিযোগ, স্বতন্ত্র প্রার্থী (কেটলি) শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালান তিনি। সেই ক্ষোভ থেকে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল এবং তাঁর ভাই মিজানের ভাড়াটে ক্যাডাররা এই হামলা চালিয়েছে।

এদিকে গতকাল সন্ধার দিকে চেয়ারম্যানের দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক ইন্টিলিজেন্ট) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, বেআইনিভাবে জনসমাগম, জখম, হামলা ও অগ্নিসংযোগের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। ওসি তদন্ত জুবায়ের আহমেদসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছি। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ওরফে জাহাঙ্গীর মাস্টার জানান, রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিক ও মিজানের নেতৃত্বে আব্দুস সাত্তার, রফিকুল ইসলাম, সোহেলসহ দুই শতাধিক লোক এ হামলা চালিয়েছে। এমন ৪৪ জনকে শনাক্ত করে নাম উল্লে­খ করে মামলা দায়ের করেছি। এখনো এলাকার ত্রাস ‘রফিক ও মিজান’ নানাভাবে লোক মারফতে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

চেয়ারম্যানসহ অন্য ভুক্তভোগীরা বলছেন, রফিক ও তার সন্ত্রাসী ভাই মিজান সরাসরি উপস্থিত না থেকে নির্দেশনা দেন, সেভাবে তাদের ক্যাডাররা এ হামলা চালিয়েছে। মূলত হামলা চালানোর সময়ে ধারণকৃত ভিডিওতে যেন তারা না আসে, সেজন্য আড়ালে থেকে এ নির্দেশনা দেন।

ঘটনার মূলহোতা রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ও তার ভাই মিজানকে কেন মামলার আসামি করেননি এমন প্রশ্নে ভুক্তভোগী চেয়ারম্যান বলেন, তাকে আসামি করলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে। তাই ভয়ে আসামি করিনি। এমনিতে ঘটনার পর থেকে তাদের হুমকিতে প্রাণনাশের আতঙ্কে আছি।

আরও পড়ুন: রূপগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা: ইউপি কার্যালয়ে হামলা-অগ্নিসংযোগ

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক