ওজন বাড়াতে ড্রাগনে ক্ষতিকর টনিকের ব্যবহার

ড্রাগনফল

ওজন বাড়াতে ড্রাগনে ক্ষতিকর টনিকের ব্যবহার

মশিউর রহমান

ড্রাগন ফল বর্তমানে অতি সুপরিচিত একটি নাম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ড্রাগনফলের চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর দেশে ক্রমবর্ধমান হারে ড্রাগন ফলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু চাষী অধিক মূনাফা লাভের আশায় ড্রাগন ফলে ভারতের অনুমোদনহীন ডক্টর ডন’স ড্রাগন টনিক ব্যবহার করছেন। এতে করে ফলের ওজন বাড়ছে।

উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু স্বাদহীন হয়ে পড়ছে ফলটি। ফলে বাজারে এর বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও জার্মপ্লাজম সেন্টারের পরিচালক ড. মোক্তার হোসেন জানান প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ড্রাগন ফলের ওজন ২৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আর টনিক ব্যবহার করে উৎপাদিত ড্রাগন ফলের ওজন ৩০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ৯০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এই ড্রাগন ফলের রং এক রঙা থাকে না। ফলের রং তখন পার্পেল বা লাল রঙের সঙ্গে সবুজ রঙের মিশ্রণ থাকে। এক পাশে বা অন্তত এক তৃতীয়াংশ সবুজ থাকে। কারণ পুরো এক রঙের হওয়া পর্যন্ত গাছে রাখা হলে সেটি পঁচে যায়।  

অধ্যাপক মোক্তার হোসেন বলেন, টনিক ব্যবহার করে উৎপাদিত ফলে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান তৈরি হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাচ্ছে না। উৎপাদিত ড্রাগন ফল পানসে স্বাদের হবে। মিষ্টি একেবারেই থাকবে না। কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত যেকোনো পণ্যেরই স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বড় আকারের ড্রাগন কোনোভাবেই অনিরাপদ নয়। প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটরস হিসেবে যে জিবরেলিক এসিড বা টনিক ব্যবহার করা হচ্ছে তার ব্যবহার বিজ্ঞানসম্মত। জিবরালিক এসিড ফলে স্প্রে করে ড্রাগন ফলের আকাড় বড় করা সম্ভব। কিন্তু তাতে ফলের বাহ্যিক কোনো পরিবর্তন আসবে না। স্বাদও অক্ষুণ্ন থাকবে।

অন্যদিকে Dr:MM Dawn আবিষ্কার “ড্রাগন টনিক” ব্যবহারের ফলে ফলের আয়তন অনেকটা বড় হয়ে যায় এটি সত্যিই কিন্তু এই টনিক ব্যবহারের ফলে অনেক রকম সমস্যা সৃষ্টি হয় । ড্রাগন ফল বড় হয় কিন্তু ফলটি অর্ধপাকা অর্ধকাঁচা অবস্থায় থাকে এবং ফলটি পাকতে বেশ অনেকদিন সময় লাগে। আর এইটা অনেকদিন লাগাতার ব্যবহার করতে থাকলে একসময় গাছে ফুল এবং ফলের সংখ্যা কমে যায় পরবর্তীকালে হলে ফলের সাইজ ছোট হয়ে যায়।

ড্রাগন ফল চাষে হাজার হাজার কৃষক ও কৃষিশ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। বিভিন্ন অসাধু ড্রাগন চাষিরা যেভাবে টনিক ব্যবহার শুরু করেছেন তাতে ড্রাগন চাষে ধস নামা সময়ের ব্যাপার।

news24bd.tv/তৌহিদ