দেশে তেল উত্তোলনের সম্ভাবনা, কাটতে পারে জ্বালানি সংকট

সিলেটের একটি গ্যাস কূপ

দেশে তেল উত্তোলনের সম্ভাবনা, কাটতে পারে জ্বালানি সংকট

আশরাফুল ইসলাম রানা

পরিত্যক্ত কূপে নতুন করে দেখা দিয়েছে জ্বালানি তেল উত্তোলনের সম্ভাবনা। এমআইএসটির সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, সিলেটের হরিপুরে মজুদের ৯৫ ভাগ জ্বালানি তেল এখনো খনিগর্ভেই রয়ে গেছে। এর পরিমাণ প্রায় ৩০ মিলিয়ন ব্যারেল। এছাড়া কৈলাশটিলায় মজুদ আছে আরও ৯০ মিলিয়ন ব্যারেল।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে মূল্যবান এই খনিজ তেল উত্তোলন সম্ভব।  

পেট্রোবাংলার হিসাবে দেশে গ্যাস কূপের সংখ্যা এখন ১০৮টি। যদিও এর প্রায় অর্ধেকই দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সংস্কারের মাধ্যমে এসব কূপ থেকে কী পরিমাণ পেট্রোলিয়াম পাওয়া সম্ভব, তা জানতে গবেষণা  চালায় মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)।

 

এমআইএসটির অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিশদভাবে বিশ্লেষণ করে দেখেছি যে, এখানে বিপুল পরিমাণ তেলের মজুত আছে। বাপেক্সেও এখানে বিপুল তেলের মজদ পেয়েছে। ২০১৫ সালে যে কূপটা খনন করা ছিল সেখানে আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে বিশ্লেষণ করে দেখেছি, সেখানেও তেলের একটি বড় মজুদ আছে এবং সেই তেলের গুণগতমান আরও ভালো।

ভারত সীমান্তবর্তী সিলেটের পাহাড়ি জনপদ হরিপুরে ১৯৫৫ সালে প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পায় পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। পর্যায়ক্রমে ৭টি কূপ খননের পর ১৯৮৬ সালে একটিতে পাওয়া যায় বহু মূল্যবান জ্বালানি তেল। তবে মাত্র ৫ শতাংশ তেল উৎপাদন করে ১৯৯৪ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় দেশের প্রথম এই তেলক্ষেত্র।

এই কূপ নিয়ে করা নতুন গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক বদরুল ইমামও। তিনি বলেন, নিয়ম মেনে তেল না তোলায় বন্ধ হয়েছিল হরিপুর।  তাছাড়া প্রথমে তেল পাওয়ার পর আরও খনন করা বা পাশের জয়গায় আরও অনুসন্ধানের মতো কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়নি।  

সরকার হরিপুর নিয়ে নতুন করে ভাবছে বলে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, হরিপুরে নতুন টেকনোলজি ব্যবহার করে তেল অনুসন্ধানের কাজ করা হবে।  

গত ডিসেম্বরে হরিপুরের পাশেই নতুন একটি তেলক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেটে ছোট ছোট অনেক তেলক্ষেত্রের সম্ভাবনা রয়েছে। যার সমন্বিত উৎপাদন নিশ্চিত করা গেলে কাটতে পারে জ্বালানির দুর্দশা।  
news24bd.tv/আইএএম