‘পিক ভিটামিন ব্যবহারে নষ্ট আলুর খেত’, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

পিক ভিটামিন ব্যবহারে আলু খেত নষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন কৃষকেরা।

‘পিক ভিটামিন ব্যবহারে নষ্ট আলুর খেত’, দুশ্চিন্তায় চাষিরা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

লাভের আশায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আলুর আবাদ শুরু করেছিলেন নজমুল ইসলাম। স্বপ্ন ছিল লাভের টাকায় ঋণ পরিশোধ করে সংসারে ফিরিয়ে আনবেন সফলতা। শুরুর দিকে আলু গাছের উর্বরতা দেখে খুশি ছিলেন তিনি। চলতি মাসের ৮ জানুয়ারি খেতের পুষ্টি বাড়াতে ‘পিক' নামে একটি মাইক্রো পুষ্টি কীটনাশক ব্যবহার করেন তিনি।

পরের দিন থেকে আলু খেতে পচন ও নষ্ট হওয়া শুরু হয়। তারপর থেকে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মালিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নজমুল ইসলাম। শেষ সম্বল আলুর আবাদ নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

শুধু নাজমুল নন, একই গ্রামের আরও ১০ জন কৃষক কর্তৃক এসএএম অ্যাগ্রো কেমিক্যালের মাইক্রো ভিটামিন ‘পিক’ কীটনাশক ব্যবহার করে আলু খেত নষ্টের অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রামটির ১০ জন কৃষকের সাত একর জমির আলুর খেতে পচন ধরেছে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আলুর গাছগুলো মরে যাওয়া শুরু করেছে। আর আলুর শিকড়ে পচন ধরে সেগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে। খেতের এমন দুরবস্থা দেখে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন আলু চাষিরা।

আলু চাষি নজমুল ইসলাম বলেন, শুরুতে আমার আলু গাছগুলো বেশ ভালো ছিল। পিক ব্যবহারের পরের দিন থেকে গাছগুলো মরে যাওয়া শুরু করে। শেকড়ে পচন ধরে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা এর ক্ষতিপূরণ চাই। সেটা না হলে কীভাবে ঋণ পরিশোধ করব।

আরেক চাষি বাচ্চু বলেন, আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে যা খরচ হয়েছে সেটি আমাদের দেওয়া হোক। তাদের কীটনাশক ব্যবহার করে আমাদের সব শেষ হয়ে গেল।

কীটনাশক বিক্রেতা আলম হোসেন বলেন, এই কোম্পানির কীটনাশক অনেক দিন থেকে বিক্রি করে আসছি। এর কাজও অনেক ভালো। এবারে যারা পিক কীটনাশক দিয়েছেন সবার আলু খেত নষ্ট হয়ে গেছে। আমি তাদের অবগত করেছি, তারা দেখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

এসএএম অ্যাগ্রো কেমিক্যাল এর এরিয়া ম্যানেজার নুরুজ্জামান বলেন, তারা বলছেন পিক ব্যবহার করার কারণে এমন হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখে আমারও এটি মনে হয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নেবেন বলেন জানিয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এমন খবর শোনার পর আমরা সেই খেতগুলোতে গিয়েছিলাম। খেতগুলোতে আর আলু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ইতোমধ্যে আমরা কীটনাশকটি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি। এটি যাতে আর বিক্রি না হয় সেটি বলে দিয়েছি এবং কৃষকদের ক্ষতিপূরণে আমরা সমন্বয় করছি।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক