জাপা কি সংসদে বিরোধী দল হচ্ছে, কী আছে আইনে?

জাতীয় পার্টি

জাপা কি সংসদে বিরোধী দল হচ্ছে, কী আছে আইনে?

অনলাইন ডেস্ক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মাত্র ১১টি আসনে জয়লাভ করেছে। এদিকে ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, যাদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বিগত সংসদে ২৭টি আসন নিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল জাতীয় পার্টি। এবার বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংখ্যা জাতীয় পার্টিকে ছাড়িয়ে যাওয়ায় সংসদে বিরোধী দল কে হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা চলছে।

 

সোমবার (২২ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংসদে অপজিশন কে হবে সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীরা স্বতন্ত্র আছে। বিরোধী দল তো জাতীয় পার্টি। ’ 

জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হলে সংসদে আওয়ামী লীগ ভার্সেস আওয়ামী হয়ে যাচ্ছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘তারা একটা রাজনৈতিক দল, আওয়ামী লীগ ভার্সেস আওয়ামী লীগ মানে? তাদের পার্টি হচ্ছে জাতীয় পার্টি, নট আওয়ামী লীগ। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা স্বতন্ত্র আছে।

’ 

ওবায়দুল কাদেরের ওই বক্তব্যের পর রংপুর মহানগরীর পৈত্রিক নিবাস স্কাইভিউতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘দল হিসেবে সর্বোচ্চ আসন পাওয়ায় জাতীয় পার্টির বিরোধী দল হওয়াটা স্বাভাবিক। ’ তিনি বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমরাই বিরোধী দল হব। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি বা ঘোষণা পাইনি। ’ 

তবে বিরোধী দল হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনি বধ্যবাধকতা আছে কি না সে বিষয়টি এখন আলোচনা আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কার্যপ্রণালিবিধি দ্বারা বাংলাদেশের সংবিধান ও জাতীয় সংসদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়, তার কোথাও বিরোধী দল সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট বিধান নেই। অর্থাৎ ৩০০টি আসনের মধ্যে ন্যূনতম কতগুলো আসন পেলে কোনো দল বিরোধী দলের আসনে বসতে পারবে কিংবা বিরোধীদলীয় নেতা কে হবেন, তার যোগ্যতা কী হবে—এসব বিষয়েও সুস্পষ্ট করে কিছু বলা নেই।

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিকের মতে, ‘কতজন সংসদ সদস্য নিয়ে সংসদে বিরোধী দল গঠন করতে হবে, সংবিধানে এ সম্পর্কে কোনো সুস্পষ্ট বিধান নেই। ’ তিনি বলেন, ‘সংবিধানে এ সম্পর্কে কিছুই বলা নেই। পার্লামেন্টের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। যখন আমাদের সংবিধান বা ভারতের সংবিধান লেখা হয়েছিল, তখন এ ধরনের পরিস্থিতি হতে পারে- এটা কেউ চিন্তাই করেনি। ’ 

তিনি আরও বলেন, ‘১৫৩টি অনুচ্ছেদ আছে সংবিধানে, ১৫৩টি অনুচ্ছেদে কিছু বলা নেই। অন্য কোনো আইনেও আমার জানামতে কিছু বলা নেই। তাই হুট করে এখানে কী হবে, তা বলা মুশকিল। পড়াশোনা করতে হবে, অনেককিছু ঘাঁটতে হবে। যেটা বললাম, কোথাও কিছু লেখা নেই—এবং আইনে সবকিছু লেখা থাকে না। যখন থাকে না, তখন আশেপাশের অনেককিছু নিয়ে পড়ে, বুঝে, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে এটার উত্তর দাঁড় করাতে হবে। ’ 

news24bd.tv/আইএএম