বিশ্বে প্রথম ম্যালেরিয়ার গণটিকা দেওয়া শুরু করল ক্যামেরুন

ম্যালেরিয়ার টিকা দেয়া প্রথম দেশ হতে যাচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশের ক্যামেরুন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বে প্রথম ম্যালেরিয়ার গণটিকা দেওয়া শুরু করল ক্যামেরুন

অনলাইন ডেস্ক

শিশুদের নিয়মিতভাবে ম্যালেরিয়ার টিকা দেয়া প্রথম দেশ হতে যাচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশের ক্যামেরুন। এর ফলে আফ্রিকাজুড়ে হাজারো শিশুর মৃত্যু ঠেকানো যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর: বিবিসির।

দেশটির কর্মকর্তারা সোমবার (২২ জানুয়ারি) শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনটিকে আফ্রিকায় মশাবাহিত ম্যালেরিয়া রোধে কয়েক দশকের দীর্ঘ প্রচেষ্টার একটি মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

ম্যালেরিয়ার কারণে বিশ্বে যত রোগী মারা যায় তার ৯৫ শতাংশের বাস এই মহাদেশে।

সোমবার ইয়ান্ডুবের কাছে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক কন্যাশিশুকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাবমতে, প্রতি বছর আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ায় ৬ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা অন্তত ৮০ শতাংশ।

ক্যামেরুন বিনামূল্যে ছয় মাস বয়সী শিশুদেরকে ম্যালেরিয়ার আরটিএস, এস টিকা দিচ্ছে। এ টিকার মোট চার ডোজ নিতে হয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, অভিভাবকদের সুবিধার জন্য শিশুদের অন্যান্য রুটিন টিকাগ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই এই চার ডোজ টিকা দিয়ে দেওয়া হবে।

মার্কিন গবেষকরা বলছেন, ম্যালেরিয়ার টিকাটি অন্তত ৩৬ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। অর্থাৎ, এ টিকা প্রত্যেক তিনজনের মধ্যে একজনের জীবন বাঁচাতে পারে।

ম্যালেরিয়া কাউন্সিল কেনিয়ার কর্মকর্তা উইলিস আখওয়ালে বলেন, এই টিকাদান নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক এবং জীবন রক্ষাকারী। তবে টিকাটির কার্যকারিতার তুলনামূলক কম হারের কারণে এটি ‘‘সিলভার বুলেট’’ নয়।

তবে চিকিৎসাকর্মীরা বলছেন, মশারি এবং ম্যালেরিয়ার ট্যাবলেটের পাশাপাশি ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এই টিকা একটি বাড়তি হাতিয়ার হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ। মশারি, ট্যাবলেট এবং টিকা তিনটি একসঙ্গে ব্যবহার করা হলে শিশুরা ম্যালেরিয়া থেকে ৯০ শতাংশ সুরক্ষা পাবে- বলা হয়েছে যুক্তরাজ্য-পরিচালিত একটি গবেষণায়।

ক্যামেরুনে ম্যালেরিয়ার টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনায় সহায়তা করেছেন চিকিৎসক শালম এনদৌলা। বিবিসি-কে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা এবং দ্রুত রোগ নির্মূল করার সক্ষমতা আছে। ’’

বিখ্যাত ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জিএসকে প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে আরটিএস, এস টিকা তৈরি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকাটি অনুমোদন করেছে এবং ক্যামেরুনে টিকাদান শুরুর ঘটনাকে বিশ্বে মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ আখ্যা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে।

news24bd.tv/DHL