বগুড়ায় চিকন চাল ৬৫, মোটা ৪৯ টাকা

বগুড়া প্রশাসকের সভাকক্ষে ধান ও চালের মূল্যর ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা

বগুড়ায় চিকন চাল ৬৫, মোটা ৪৯ টাকা

আব্দুস সালাম বাবু বগুড়া

চালের বাজারে ঊর্ধ্বগতি রোধে দাম নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন। বগুড়ার বাজারে খুচরা পর্যায়ে চিকন চাল সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা ও মোটা চাল ৪৯ টাকায় বিক্রি করতে হবে। নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত নেওয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে একই সঙ্গে গুজব ছড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম।

মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ধান ও চালের মূল্যর ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।

জেলা প্রশাসন ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় বগুড়ার আয়োজনে এ সভায় অটোমেটিক ও হাস্কিং মিল মালিক এবং আমদানিকারক আড়তদার ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, হঠাৎ করেই বগুড়া জেলায় চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। গুজব সৃষ্টি করে চালের দাম বৃদ্ধি করেছে একটি অসাধু চক্র।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন , কোনো ধরনের ক্রাইসিস নেই অথচ গুজব ছড়িয়ে ধান চালের দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

সরকারকে বিব্রত করতেই কোনো কারণ ছাড়াই চালের দাম বাড়িয়েছে তারা। এক, দুই দিনে কোটিপতি হতে গিয়ে গুজব ছড়িয়ে চালের দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

মতবিনিময় সভায় সকলের সাথে কথা বলে মিল, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম নির্ধারণ করে দেন জেলা প্রশাসক। কাটারী ও স্পেশাল মিনিকেট/জিরা চাল মিলার পর্যায়ে ৬২ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩ টাকা ও ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা; বিআর-২৮ ও ৪৯ চাল মিলার পর্যায়ে ৫২ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ৫৩ টাকা ও ভোক্তা পর্যায়ে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা, স্বর্ণা-৫ চাল মিলার পর্যায়ে ৪৬ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে ৪৭ টাকা ও ভোক্তা পর্যায়ে ৪৮ থেকে ৪৯ টাকা এবং চিনিগুড়া চাল ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা কেজি প্রতি দাম নির্ধারণ করা হয়।

এসময় জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বগুড়ায় কী পরিমাণ ধান ও চাল উৎপাদন হয় তা সকলের জানা। বগুড়ায় ধান চালের কোনো সংকট নেই। জেলার উৎপাদিত চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোতাহার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কাজী সাইফুদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন, জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রেজভী, সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল হকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও বগুড়া জেলার রাইস মিল মালিক, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

সভায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ অটো মেজর এন্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি বগুড়ার সভাপতি এটিএম আমিনুল ইসলাম বলেন, চালের দাম মিল, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সবাই এটা মেনে নিয়েছেন। তবে ধানের দাম বৃদ্ধি পেলে চাল উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, তাই ধানের দাম বাড়লে চালের মূল্য পুনর্বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানাব।

উল্লেখ্য, ধানের দাম কমলেও বগুড়ার চালের বাজারে কোনো প্রভাব পড়েনি। বিভিন্ন গোডাউনে প্রশাসনের অভিযানে বগুড়ার বাজারে ধানের সরবরাহ বাড়ায় প্রতি মণ ধানের দাম ৫০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। বিশেষ করে চালের খুচরা বাজারে বর্ধিত দামেই বিক্রি হচ্ছে। চিকন জাতের ধানের দাম না কমলেও মোটাজাতের ধানের দাম কমেছে। এক সপ্তাহ আগে মোটা ধান ১৪শ’ টাকা মন বিক্রি হলেও এখন তা এখন ১৩শ’  টাকা থেকে ১৩৫০ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে রনজিত, স্বর্না ও ঊনপঞ্চাশ জাতের মোটা চাল ৪৫ থেকে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চিকন জাতের চাল কাটারী ভোগ ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, আঠাশ জাতের চাল ৫৬ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, খুচরা পর্যায়ে আরও ১ থেকে ২ টাকা বেশি।

চলতি আমন মৌসুমে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫১০ হেক্টর জমি থেকে ৯ লাখ টন ধান, চাল আকারে প্রায় ৬ লাখ মে.টন উৎপাদন হবে। গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ধান কর্তন শেষে কৃষকের ঘরে উঠেছে আমন ধান।

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক