পুরোনো সেই ‘ঢাকা গেইট’ ফিরেছে স্বরূপে

সংস্কারের পর ‘ঢাকা গেইট’। ছবি: সংগৃহীত

পুরোনো সেই ‘ঢাকা গেইট’ ফিরেছে স্বরূপে

 

অনলাইন ডেস্ক

অযত্ন আর অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসেছিল ঐতিহাসিক ‘ঢাকা গেইট’। অবশেষে স্বরূপে ফিরেছে স্থাপনাটি। সংস্কারের পর আজ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে ঢাকা প্রবেশের পুরোনো সেই ফটকটি।

জনসাধারণের জন্য এ স্থাপনাটি আজ বুধবার (২৪ জানুয়ারি) উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তরফে জানানো হয়েছে।

ইতিহাস বলছে মোগল আমলে বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করতে ব্যবহার করা হতো এই তোরণ। সেই সময় এর নাম ছিল ‘মীর জুমলার গেট’। পরে কখনো ‘ময়মনসিংহ গেট’ কখনো ‘ঢাকা গেট’ বা রমনা গেইট নামে পরিচিতি পায়।

গতবছর মে মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে এই স্থাপনার সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রায় ৮ মাস ধরে চলে সংস্কারে কাজ। শেষ সময়ে চলছে রং আর ধোঁয়া মোছার কাজ। এর আশেপাশে দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা করা হয়েছে। মীর জুমলার আসাম অভিযানের ‘বিবি মরিয়ম’ কামানটি ওসমানী উদ্যান থেকে এনে ঢাকা গেইটের পাশে স্থাপন করা হয়েছে।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুন ও ফটকের নতুন নকশাকার অধ্যাপক আবু সাঈদ উপস্থিত থাকবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরের কাছে এর অবস্থান। কালের স্রোতে হারিয়ে যেতে বসা জরাজীর্ণ ‘ঢাকা গেইট’র নান্দনিকতা ফেরাতে ২০২২ সালে সংস্কারের উদ্যোগ নেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

গত বছরের মে মাসে সংস্কার শুরু হয়ে সম্প্রতি কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ৮২ লাখ টাকা খরচ করে এ গেইট সংস্কার করেছে ঠিকাদার কোম্পানি আহনাফ ট্রেডিংস।

প্রত্নতত্ব বিশেষজ্ঞ ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের অধ্যাপক আবু সাঈদের নেতৃত্বে একদল বিশেষজ্ঞ ফটকটির নতুন নকশা তৈরি করেন। সেই নকশার আদলেই নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে।

অধ্যাপক আবু সাঈদ বলেন, “জনশ্রুতি আছে, মীর জুমলা ঢাকা উত্তরের গেইট নির্ধারণের জন্য এটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু এখন যে গেইটটা আছে, সেটা ব্রিটিশ আমলে চার্লস ড’স তৈরি করেন।

ঐতিহাসিক ঢাকা গেইট তিনটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিমাংশ পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ভবনের পাশ, পূর্বের অংশ পড়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তিন নেতার সমাধির প্রবেশপথের সামনে এবং মাঝের অংশ পড়েছে দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসিগামী সড়ক দ্বীপে। বর্তমানে ফটকটির উপর দিয়ে মেট্রোরেল চলাচল করে।

ঢাকা কোষে বলা হয়েছে, ঢাকার সীমানা চিহ্নিত করতে এবং স্থলপথে শত্রুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে ১৬৬০ থেকে ১৬৬৩ সালের মধ্যে ফটকটি নির্মাণ করেছিলেন মীর জুমলা। তবে এটি মুঘল আমলেই নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।

news24bd.tv/DHL