বিজিবি সদস্যদের মরদেহ হস্তান্তর: নেওয়া হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে

নিহত বিজিবি সদস্য মোহাম্মদ রইস উদ্দিনের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হচ্ছে

বিএসএফের গুলিতে নিহত

বিজিবি সদস্যদের মরদেহ হস্তান্তর: নেওয়া হচ্ছে গ্রামের বাড়িতে

যশোর প্রতিনিধি :

বেনাপোলের ধান্যখোলা জেলেপাড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বিজিবি সদস্য মোহাম্মদ রইস উদ্দিনের মরদেহ দু'দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারত কর্তৃপক্ষ। বুধবার বেলা ১১ টার দিকে শার্শার শিকারপুর সীমান্তের মুক্তিযোদ্ধা খামারপাড়া ও ভারতের গাঙ্গুলিয়া সীমান্তে মেইন পিলার ২৮ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।  

দুপুরে হেলিকপ্টার যোগে মরদেহ নেওয়া হচ্ছে তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের শ্যামপুর সাহা পাড়ায়।

শিকারপুর সীমান্তে বিজিবি’র ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আহমেদ হাসান জামিলের নেতৃত্বে মরদেহটি গ্রহণ করা হয়।

এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের ১০৭ ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে মরদেহ গ্রহণের পর নেওয়া হয় যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।  

জানা যায়, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান, দক্ষিণ-পশ্চিম রিজিওন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ, খুলনা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল রেজাউল কবির, ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আহমেদ হাসান জামিলসহ পদস্থ কর্মকর্তারা জানাজায় অংশ নেন।

জানাজা শেষে বেলা ২টা ৫০ মিনিটে নিহত সৈনিক রইস উদ্দিনের মরদেহ হেলিকপ্টার যোগে তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের শ্যামপুর সাহাপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

গত সোমবার ভোরে সীমান্তের ওপারে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন বিজিবি সদস্য রইস উদ্দিন।

বিজিবি’র ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আহমেদ হাসান জামিল জানান, ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বিএসএফকে বিষয়টির ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের দাবির পাশাপাশি কূটনৈতিকভাবে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায়  ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারিদের সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখলে দায়িত্বরত বিজিবি টহল দল তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।  

এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইস উদ্দিন চোরাকারবারিদের পিছনে ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দল-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় সে বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ঘটনার পরপরই এ বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয় এবং জানা যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উক্ত সৈনিক মৃত্যুবরণ করে।

স্থানীয় ধান্যখোলা জেলেপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সোমবার ভোরে তারা অন্তত ৭-৮ রাউ- গুলির শব্দ শুনেছেন। পরে সকালে সীমান্তের ওপারে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।

তারা বলেন, সীমান্ত দিয়ে ভোরে গরু চোরাকারবারিদের ধাওয়া করার সময় বিএসএফের ছোঁড়া গুলিতে বিদ্ধ হন রইস উদ্দিন নামে বিজিবি’র এক সদস্য। বিএসএফ সদস্যরা তাকে ভারতের বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যায় হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তিনি মারা যান।

এদিকে বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান বেনাপোলের ধান্যখোলা বিওপি ক্যাম্প ও সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।  

news24bd.tv/কেআই