যে কারণে নিজেদের সৈন্যকে হত্যা করছে ইউক্রেন

বুধবার(২৪ জানুয়ারি) রাশিয়ার আকাশসীমায় একটি আইআই-৭৬ যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে।

যে কারণে নিজেদের সৈন্যকে হত্যা করছে ইউক্রেন

অনলাইন ডেস্ক

বুধবার(২৪ জানুয়ারি) রাশিয়ার আকাশসীমায় একটি আইআই-৭৬ যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। বিমানটিতে থাকা ৬৫ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দী, তিনজন রাশিয়ান সামরিক নিরাপত্তারক্ষী এবং ছয়জন ক্রুর মধ্যে সকলেই নিহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে ইউক্রেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সরবরাহ করা প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বিমানটিকে ধ্বংস করা হয়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, নিজ দেশ থেকে এত দূরে ইউক্রেনের সৈন্যরা কি করছিলেন? উত্তর হচ্ছে, রাশিয়ার লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক অঞ্চলে এসকল সৈন্যকে আটক করা হয়, এবং পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২৯ জুলাই অলনোভকা অঞ্চলে একটি বন্দী শিবিরে ইউক্রেন হিমারস ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ৫৩ জনকে হত্যা করে।

ন্যাটো কর্তৃক ইউক্রেনকে দেয়া অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র থেকে ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দীদেরকে দূরে সরানোর লক্ষ্যেই বুধবার নিহত হওয়া যুদ্ধবন্দীদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছিলো।

কিন্তু রাশিয়ার এই বুদ্ধি কোনো কাজে আসেনি। ইউক্রেন আবারও প্রমাণ করেছে নিজেদের নাগরিকদের জন্য তারা কতোটা বিপজ্জনক হতে পারে।

বুধবার স্থানীয় সময় বিকেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার পরে ইউক্রেন সরকারের টেলিগ্রাম চ্যানেলে খারকিভ অঞ্চলে হামলার জন্য বিমানটিতে রাশিয়ান এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র বহন করা হচ্ছিলো মর্মে সংবাদ প্রকাশিত হয়। কিছুক্ষণ বাদে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিমানটিতে ৬৫ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দী থাকার কথা ঘোষণা করলে ইউক্রেনের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র বহন করার খবর মুছে দেয়া হতে থাকে।

বরাবরের মতোই ইউক্রেন নিজেদের সৈন্যকে হত্যা করার অভিযোগ অস্বীকার করছে, যার ফলে কেন তারা হামলা চালিয়েছে সেটি খুব শীগ্রই জানা যাবে না বলেই মনে হচ্ছে। হামলার ঘটনাটি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর ভুল সিদ্ধান্ত কিংবা রাশিয়াকে উত্তেজিত করার প্রচেষ্টা উভয়ই হতে পারে। তবে এ ঘটনার ফলে যুদ্ধবন্দী বিনিময় বন্ধ করবে না রাশিয়া। গত দুই বছরে প্রায় এক হাজার রাশিয়ান যুদ্ধবন্দীকে ইউক্রেন থেকে ফিরিয়ে আনা হলেও আরও অনেক রাশিয়ান সৈন্য এখনও ইউক্রেনে বন্দী অবস্থায় আছে। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্যই যুদ্ধবন্দী বিনিময় প্রয়োজন।

দিন দিন দূর্বল হতে থাকা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এখন আর সুদিনের আশায় কিংবা স্বাধীনতার প্রত্যাশায় যুদ্ধ করছে না, কারণ ইউক্রেনের সামরিক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে যে ২০২২ সালের মার্চ এবং এপ্রিল মাসে তাদেরকে বেশ কিছু উপযুক্ত শর্ত দিয়েছিল রাশিয়া।

ইউক্রেন শত্রুকে বিতাড়িত করার জন্যও যুদ্ধ করছে না, কারণ একমাত্র পাগলরাই আশা করতে পারে যে রাশিয়াকে পরাজিত করার ক্ষমতা ইউক্রেনের আছে।

ইউক্রেন ইউরোপের অংশ হওয়ার জন্যও যুদ্ধ করছে না, কারণ ইউক্রেনকে ন্যাটোর অংশ হওয়ার প্রক্রিয়া থেকে পশ্চিমা দেশগুলো পিছু হটতে শুরু করেছে।

শুধুমাত্র ভলোদিমির জেলেন্সকিকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্যই ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

news24bd.tv/ab