খালের পাশে ঝোঁপে পড়ে ছিল দিনমজুরের গলাকাটা মরদেহ

খালের পাশে ঝোঁপে পড়ে ছিল দিনমজুরের গলাকাটা মরদেহ

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভাইটকামারী লিলুখালের পাড় হতে শাহ কামাল (৩৮) নামে এক ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে পুলিশ ওই লাশ উদ্ধারের পর দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত শাহ কামাল উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের ভাইটকামারী গ্রামের মৃত জুবেদ আলীর ছেলে।

এদিকে ওই ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাহ কামালের মামা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানসহ পাঁচজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শাহ কামাল রাতের খাবার খেয়ে বের হন। পরে গভীর রাতেও বাড়ি না ফেরায় তার স্ত্রী শেফালি বেগম (৩২) প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে শাহ কামালের খোঁজ করে পাননি। পরে শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে এক যুবক ভাইটকামারী লিলুখালের পাড়ে ঝোঁপের মধ্যে গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ খবর দিলে নালিতাবাড়ী থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শাহ কামালের মরদেহ উদ্ধার করে।

পরে মরদেহের সুরাতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।  

এদিকে খবর পেয়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মোনালিসা বেগমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও হত্যারহস্য উন্মোচনে সিআইডিসহ পুলিশের অন্যান্য বিভাগ কাজ করছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালে ভাইটকামারী গ্রামের ফজল মিয়ার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাগ্নে শাহ কামাল ৫৫ শতক জমি বর্গা নেন। পরে ২০১৯ সালে হাবিবুর রহমানের সাথে ফজল মিয়ার পরিবারের ঝগড়া  বাধে। তখন হাবিবুর রহমানের গুলিতে ফজল মিয়ার ছেলে ইদ্রিস আলী খুন হন। ওই সময় হাবিবুর, তার স্ত্রী-সন্তান ও ভাতিজাসহ কয়েজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। তাদের সকলেই এখন জামিনে রয়েছেন।

এদিকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফজল মিয়া শাহ কামালকে বন্ধকি জমি বুঝিয়ে দেননি। ৭০ হাজার টাকাও ফিরিয়ে দেননি। এ নিয়ে শাহ কামাল বর্গা নেওয়া জমির টাকা ফেরত পেতে একাধিক সালিসি বৈঠক করেও কোনো সুরাহা পাননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন গ্রামবাসী বলেন, ফজল মিয়ার ছেলেকে খুন করার দায়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা জেল থেকে এখন জামিনে আছেন। অপরদিকে চেয়ারম্যান ভাগ্নে শাহ কামাল ফজলের কাছে বর্গা নেওয়া জমির টাকা পান। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে হয়তো শাহ কামালকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

এ ব্যাপারে যোগানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বলেন, শাহ কামালের সাথে ফজল মিয়ার টাকা-পয়সার একটা বিরোধ ছিল। তবে কী কারণে শাহ কামালকে কে বা কারা এই ভাবে হত্যা করেছে তা ধারণা করা যাচ্ছে না। তবে এই ঘটনার সাথে প্রকৃতভাবে যারা জড়িত তাদের চিহিৃত করে আইনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ওই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

news24bd.tv/তৌহিদ