বাস স্ট্যান্ডে সুটকেসের ভেতরে পাওয়া সেই মরদেহের রহস্য উন্মোচন

সংগৃহীত ছবি

বাস স্ট্যান্ডে সুটকেসের ভেতরে পাওয়া সেই মরদেহের রহস্য উন্মোচন

অনলাইন ডেস্ক

ফরিদপুর শহরের নতুন বাস স্ট্যান্ডে বড় একটি সুটকেসের ভেতরে পাওয়া সেই অজ্ঞাত মরদেহের পরিচয় মিলেছে। একই সাথে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতক রোজিনা আক্তার ওরফে কাজল (৩২) নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং এসব তথ্য জানানো হয়। পাওনা টাকা চাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বেশ কিছু আলামত ও একটি মাহেন্দ্র জব্দ করেছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোর্শেদ আলম জানান, গত রোববার দুপুরে ফরিদপুর নতুন বাস স্ট্যান্ডের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের সামনে বড় একটি সুটকেসের মধ্যে অজ্ঞাতনামা এক পুরুষের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে নামে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ জানতে পারে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থেকে রোজিনা নামের এক নারী সুটকেসটি মাহেন্দ্রতে করে এনে ফরিদপুরে নতুন বাস স্ট্যান্ডে ফেলে পালিয়ে যায়।

 

মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে রোজিনাকে ঢাকার কদমতলীর জুরাইন এলাকার মো. দেওয়ানের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানার আবুল কাসেম ও পারুল বেগমের কন্যা রোজিনা আক্তার ওরফে কাজল। প্রায় ১২ বছর আগে রোজিনা দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে আসেন।  

পল্লীতে থাকার সুবাদে রোজিনার সম্পর্ক হয় পাবনা জেলার মিলন প্রামানিক নামের এক ইট ভাটা শ্রমিকের সাথে। মিলন প্রামানিক রাজবাড়ী জেলায় ভাড়া বাড়িতে থাকতো। মিলন নিয়মিত পল্লীতে যাতায়াত করতেন। এরই সূত্র ধরে রোজিনার সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।  

গত ২৭ জানুয়ারি গভীর রাতে মিলন প্রামানিকের সাথে রোজিনার পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রোজিনা ক্ষিপ্ত হয়ে মিলনের গলায় ওড়না পেচিয়ে তাকে হত্যা করে। পরে একটি সুটকেসের মধ্যে কাথা কাপড় দিয়ে মিলনের মৃতদেহ পেচিয়ে বড় একটি সুটকেসের মধ্যে রাখে। পরে লাশটি গুম করার জন্য যৌনপল্লী থেকে ৬০০ টাকা রিকশা ভাড়া করে গোয়ালন্দ বাজারে আসে। পরে গোয়ালন্দ থেকে ৬০০ টাকায় মাহেন্দ্র ভাড়া করে ফরিদপুর নতুন বাস স্ট্যান্ডে আসে।  

বাস স্ট্যান্ডে এসে ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনের টিকেট কাটে রোজিনা। পরে বাসের হেলপাড়ের সহযোগীতায় সুটকেসটি গাড়ির বক্সে রাখেন। রোজিনা নাস্তা করার কথা বলে চলে যায় এবং আর ফিরে আসেনি। রোজিনাকে না আসতে দেখে বাসের হেলপার গাড়ির বক্স থেকে সুটকেসটি নামিয়ে রাখে। দীর্ঘক্ষণ সুটকেসটি পড়ে থাকায় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে কোতয়ালী থানা পুলিশ গিয়ে সুটকেসের তালা ভেঙে ভেতরে পুরুষ এক ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পায়।  

news24bd.tv/কেআই