গাজায় যুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হওয়া মা-বাবাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ১৭ হাজার শিশু

বাবা-মা হারানো দুই শিশু--ফাইল ছবি।

গাজায় যুদ্ধে বিচ্ছিন্ন হওয়া মা-বাবাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে ১৭ হাজার শিশু

অনলাইন ডেস্ক

চলতি বছরের গত জানুয়ারিতে  হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার শিশু নিহত হয়েছে। ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওচা) যুদ্ধের প্রভাবের ওপর নিয়মিত বুলেটিন প্রকাশ করে। তারা জানিয়েছিল, প্রায় ১ লাখের ওপরে শিশু বোমা ফোবিয়ায় আক্রান্ত। ভয়ে কেঁপে কেঁপে ওঠে।

 
জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের জেমস এল্ডার বলেন, 'ইউনিসেফ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। ১১ লাখ মানুষকে (যাদের প্রায় অর্ধেকই শিশু) সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেখানে বেসামরিকদের যাওয়ার নিরাপদ কোনো জায়গা নেই। '
কিন্তু যুদ্ধ থেমে নেই।
শনিবার ( ৩ ফেব্রয়ারি) এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শিশুরা কান্না করছে আর তাদের বাবা-মাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।  
গাজায় চলমান যুদ্ধে গত চার মাসে অন্তত ১৭ হাজার শিশু পরিবার থেকে বিচ্যুত হয়েছে। জাতিসংঘের চিলড্রেন এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এরমধ্যে উপত্যকাটির প্রায় সকল শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। গতকাল শনিবার এমনটাই জানায় ইউনিসেফ।
সংস্থাটির গাজা অঞ্চলের চিফ কমিউনিকেশন অফিসার জনাথান ক্রিক্স জেরুজালেম থেকে এক মিডিয়া ব্রিফিং এ বলেন, “প্রতিটি শিশুর হারানোর এবং দুঃখের একটি হৃদয়বিদারক গল্প আছে। শিশুদের ১৭ হাজারের এই সংখ্যাটি অঞ্চলটিতে সামগ্রিক বাস্তুচ্যুত জনসংখ্যার ১ শতাংশ। ”
তবে জনাথান জানান, পরিবার থেকে বিচ্যুত হওয়া শিশুর সংখ্যাটি একটি অনুমান। কেননা চলমান পরিস্থিতিতে একেবারে নির্দিষ্ট করে সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে উপত্যকাটির প্রত্যকটি শিশুকেই একটি ভয়ঙ্কর নতুন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।
জনাথান বলেন, সঙ্গীহীন শিশুদের সনাক্ত করা ‘অত্যন্ত কঠিন’। কেননা তাদের মাঝে মাঝে আহত বা হতবাক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এক্ষেত্রে অনেকে নিজের নামও বলতে পারে না।
জনাথান বলেন, গাজার শিশুদের ক্রমাগত উদ্বেগ, ক্ষুধা হ্রাস ও ঘুমাতে না পারার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তারা যখনই বোমা হামলার শব্দ শুনে তখন তারা মানসিকভাবে আতঙ্কিত হয়।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত  ১১,৫০০ জন শিশু মারা গেছে।
এক্ষেত্রে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় অনেক ফিলিস্তিনিকে গুলি করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে যারা দক্ষিণাঞ্চলের দিকে যাচ্ছে তারা প্রায়শই উপত্যকাটির অন্যান্য অংশে তাদের আত্মীয় বা পরিচর্যাকারীদের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারছে না। বিশেষ করে ব্ল্যাকআউটের সময় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
এমন অবস্থায় ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ওচা) জানিয়েছে যে, হয়তো একদিন যুদ্ধ থামবে। কিন্তু আমরা গাজায় পুরো একটা প্রজন্মকেই হারিয়ে ফেলব।  

news24bd.tv/ডিডি