কর্মস্থলে অনুপস্থিত চিকিৎসক-নার্সদের বেতন-ভাতা বন্ধ রাখতে বললেন এমপি

ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন।

কর্মস্থলে অনুপস্থিত চিকিৎসক-নার্সদের বেতন-ভাতা বন্ধ রাখতে বললেন এমপি

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

কর্মস্থল বাদ দিয়ে ডেপুটেশন নিয়ে অন্য স্থানে অবস্থান করা ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মাজহারুল ইসলাম সুজন।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, সীমান্তের অবহেলিত মানুষের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করতে সরকার চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়ন করা হয়েছে। এখান থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করছেন তারা।

অথচ ডেপুটেশন নিয়ে অবস্থান করছেন অন্য স্থানে। এটা আমার এলাকার ভোটারদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। আমি চাই, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে। এই এলাকার মানুষ সেটির দায়িত্ব আমার কাঁধে দিয়েছেন।
এজন্য ডেপুটেশনে থাকা সকলের বেতন বন্ধ রাখতে বলেছি আমি।

হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেপুটেশনে তিনজন চিকিৎসক, ১১ জন নার্স, দুইজন মিডওয়াইফ ও সাতজন কর্মচারী ডেপুটেশন নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। এসব কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হয় হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে।

জানা গেছে, হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন  আটজন, এর মধ্যে ডেপুটেশনে আছেন তিনজন। পাশাপাশি, সিনিয়র স্টাফ নার্স পদটিতে ৩০ জনের মধ্যে সবাইকে পদায়ন করা হলেও ১১ জন ডেপুটেশন নিয়েছেন। এছাড়াও, মিডওয়াইফ পদে  পাঁচজনের বিপরীতে তিনজন কর্মরতদের দুজন ডেপুটেশনে থাকার পাশাপাশি সিকিউরিটি গার্ড, ওয়ার্ড বয়, কম্পিউটার অপারেটর, পরিসংখ্যানবিদ, জুনিয়র মেকানিকসহ আরও সাতজন কর্মচারী ডেপুটেশন নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের এসপির সহায়তা

ডেপুটেশন নেওয়ার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বিঘ্ন তৈরি হচ্ছে। রোগীরা সেবা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। এর ফলে প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসতে হচ্ছে ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় এমপি স্যার বেতন-ভাতা বন্ধ রাখতে বলেছেন। আমরা বেতন ভাতা বন্ধ রাখবো। পাশাপাশি আমাদের এখানে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য সার্জারী, গাইনী ও অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট নেই। আলট্রাসনোগ্রামসহ কয়েকটি মেশিন প্রয়োজন। সেগুলো ব্যবস্থা করে দেওয়ার দাবি তুললে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ মুঠোফোনে জানান, বেতন বন্ধের বিষয়ে আমাকে কিছু বলেননি এমপি স্যার। তবে চিকিৎসক-নার্সেরা ডেপুটেশনে থাকলেও তারা কিন্তু দায়িত্ব পালন করছে। এমপি স্যার চাইলে তাদের ডেপুটেশন বাতিল করা হবে।