যে পদ্ধতিতে হচ্ছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন

পাকিস্তানের লাহোরে একটি সমাবেশে অংশ নিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থকরা। ছবিটি ২০২২ সালের ২১ এপ্রিল তোলা

যে পদ্ধতিতে হচ্ছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন

অনলাইন ডেস্ক

রাত পোহালেই দক্ষিণ এশিয়ার নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশ পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য কোন দলটি দেশের নেতৃত্ব দেবে, কে হবেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচন সামনে রেখে এর প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আমাদের দেশের মতো পাকিস্তানেও সংসদীয় গণতন্ত্র চালু আছে।

বাংলাদেশের যেমন জাতীয় সংসদ, তেমনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ বা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির জন্য এমপি বা প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। উপরন্তু দেশটির চারটি প্রদেশের আইনসভার জন্যও ভোট হবে আগামীকাল। অর্থাৎ দেশটির প্রত্যেক ভোটার এবার দুটি করে ভোট দেবেন। একটি ভোট জাতীয় পরিষদ তথা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির জন্য, অন্যটি প্রাদেশিক পরিষদের জন্য।
 

২৪ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার এই দেশে এবার ভোট দেবেন ১২ লাখ ৮০ কোটি মানুষ, যাঁদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে। ভোট প্রদানের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্রের বুথগুলো সকাল ৮টায় খুলে দেওয়া হবে এবং বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দেওয়া যাবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি কিংবা কোনো বিশেষ কারণে এই সময়সীমা বাড়ানোও হতে পারে।  

আগামীকালের নির্বাচনে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির জন্য প্রার্থী রয়েছেন বিভিন্ন দলের ৫ হাজার ১২১ জন। আর প্রাদেশিক পরিষদের জন্য রয়েছেন ১২ হাজার ৬৯৫ জন প্রার্থী।  

নির্বাচনে কারা বিজয়ী হতে যাচ্ছেন, তা আগামীকাল রাতের মধ্যে বেসরকারিভাবে জানা যাবে। আর সরকারিভাবে শুক্রবার সকালে দেশটির নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করবে।  

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আসন রয়েছে মোট ৩৩৬টি। তবে আগামীকালের নির্বাচনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ২৬৬টি আসনের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন ভোটাররা। বাকি ৭০টি আসন হলো সংরক্ষিত। সংরক্ষিত আসনগুলোর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের জন্য আর বাকি ১০টি আসন অমুসলিমদের জন্য নির্ধারিত। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর সংরক্ষিত আসনগুলো মূলত সংসদীয় আসন পাওয়া দলগুলোর শক্তিমত্তার ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হবে।

বিজয়ী প্রার্থীরা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য মনোনীত হবেন। নির্বাচনের পর বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চাইলে কোনো দলের ব্যানারেও সংসদে যোগ দিতে পারেন।

জাতীয় পরিষদের নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে আবার একটি সংসদীয় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচিত হবেন সংসদীয় নেতা বা প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অন্তত ১৬৯ জন এমপির সমর্থন থাকা বাধ্যতামূলক। যিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন তিনি পরে নির্বাচিত এমপিদের মধ্য থেকে পছন্দ অনুযায়ী সদস্য বাছাই করে মন্ত্রিপরিষদ গঠন করবেন। এভাবে মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সমন্বয়ে দেশটির জাতীয় সরকার গঠিত হবে।  

জাতীয় পরিষদ বা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মতো প্রাদেশিক পরিষদের একই পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাদেশিক সরকার গঠন করা হবে।  

উল্লেখ্য, এবার পাকিস্তানের নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন, বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপিসহ ছোট-বড় মোট ১৪টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তবে সম্প্রতি কারাদণ্ডিত দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এর ফলে ইমরান খানের দলের অন্তত ২৩৬ জন প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

news24bd.tv/aa