সম্প্রতি ইন্ডিয়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ‘টাংগাইল শাড়ি’-র ভৌগোলিক চিহ্নের অধিকার (জিআইআর) আদায় করছে। এটা এমনই অবাক হওয়ার মত যে এই নিয়া গণমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হইছে। এই তোলপাড় শুরু হওয়া স্বাভাবিক। ইন্ডিয়ার এই দাবী ও এই সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা থিকা দাবীমূলক অধিকারের অনুমতি পাওয়া অবশ্যই নিন্দা করার মত ব্যাপার।
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের শাড়ী নিয়ে বিতর্কের অবসান হোক
আরও দুঃখজনক যে, ইন্ডিয়ার এই অপকর্মের ডিফেন্সে কতক বাংলাদেশি মিডিয়া একটিভিস্ট লেখাজোখা প্রচার করতেছে।
টাংগাইল শাড়ির জিআই অধিকার ইন্ডিয়ার পাওয়ার ডিফেন্সে তাদের লেখা-জোখার ভাষা দালালির ভাষা। আমি বলব নগ্ন দালালি। তারা কয়, যেহেতু ভারত ভাগের জেরে টাংগাইলের কিছু তাঁতি ভারতে গিয়া তারা তাগর জাত ব্যবসা বজায় রাখছে তাই তাগর এই দাবী যৌক্তিক। তারপর তারা দেশভাগের ফলে তাগর দেশান্তরি হওয়া নিয়া মায়াকান্না জোরে। যেন দেশ ভাগের জেরে দেশান্তরি হইয়া বাংলাদেশে কেও আহে নাই!
দেশ ভাগের জেরে ইন্ডিয়ায় পারি দেয়া টাংগাইলের কিছু তাঁতি সেখানে শাড়ি বুনানি ও বেঁচা বিক্রির কারবার কন্টিনিউ করছে এবং ‘টাংগাইলের শাড়ি’-র নামে তারা তাগর ব্যবসাপাতি ফুলায়া ফাঁপায়া তুলছে। শাড়ির ব্যবসায় তাগর অর্থনৈতিক উন্নতিতে আমার কোন অভিযোগ নাই, বরং তারা আরও উন্নতি করুক এই দোয়া করি। কিন্তু তারা যে সেখানে (শুনছি ইন্ডিয়ার নদীয়া অঞ্চলে তারা সমবেত) ‘টাংগাইলের শাড়ি’ নামে তাগর বোনা শাড়ি বাজারজাত করল এইটা ব্যবসায়ীক নীতি-নৈতিকতায় দুই নম্বরি, আর জিআই স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী তো অবশ্যই আপত্তিকর ব্যাপার। তারা তাগর কারিগরি দক্ষতায় যদি ভরসামান হৈত তবে তো তারা নদীয়ার নামেই তাগর বোনা শাড়ি ব্র্যান্ডিং করতে পারত! এমন তো না যে জগত থিকা টাংগাইল ও টাংগাইলে টাংগাইলের শাড়ি নাই হৈয়া গেছে !
টাংগাইলের শাড়ির জিআই অধিকার ভারতের আদায়ের ডিফেন্সে যারা দালালী করে তাগর আরেকটা কথা এইরকম- বাংলাদেশ আগে আবেদন না করায় ইন্ডিয়া এইডা করছে, আর কইরা ঠিকই করছে।
কথা হৈল, আপনার জমি আপনে চাষ না কইরা ফালায়া রখছেন বইলা আপনেরে না জিগায়া ঐখানে আমি লাঙ্গল দিতে গেলে সেইটারে বেদখল দেয়া ধইরা প্রথমে দুইপক্ষের মধ্যে রক্তারক্তি কান্ড হবে তারপর তা আদালতে গড়াবে। বাংলাদেশ সরকারের এখন উচিত সত্বর বিষয়টা আদালতে তোলা।
(বানান রীতি লেখকের নিজস্ব)
লেখক: কবি ও অনুবাদক। ইতালী প্রবাসী।
news24bd.tv/ডিডি