'যুবলীগের প্রধান কাজ প্রতিবিপ্লবীদের প্রতিহত করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকা'

আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ

'যুবলীগের প্রধান কাজ প্রতিবিপ্লবীদের প্রতিহত করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকা'

অনলাইন ডেস্ক

আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, মানবিক যুবলীগের প্রধান কাজ প্রতিবিপ্লবীদের প্রতিহত করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকা। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ইতিমধ্যে অনেক মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আপনাদের চেষ্টা ও কৃতিত্বে ‘মানবিক যুবলীগে’ পরিণত হয়েছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে শীতার্ত মানুষের জন্য রংপুর মহানগর, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলা যুবলীগের প্রতিনিধিদের কাছে শীতবস্ত্র হস্তান্তর কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এবং সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, বর্তমান যুবলীগের অন্যতম লক্ষ্য এই মানবিক ধারাকে গতিশীল করতে নেতৃত্ব দেওয়া এবং প্রতিবিপ্লবীদের প্রতিহত করে মানুষের সুখে-দুঃখে সাথী হওয়া। এ লক্ষ্যে যুবলীগ ইতিমধ্যে অনেক মানবিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আপনাদের চেষ্টা ও কৃতিত্বে ‘মানবিক যুবলীগ’-এ পরিণত হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তাই আমরা দায়বদ্ধ জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে।

সর্বোপরি আমরা দায়বদ্ধ এদেশের মানুষের কাছে।

তিনি বলেন, যুবলীগের সকল নেতা-কর্মীরা মানুষের পাশে থাকবে, এটাই আমাদের প্রত্যয়। প্রতিটি মানুষের যেন জীবনের উন্নতি হয়, প্রতিটি ছেলে-মেয়ে লেখা-পড়া শিখে মানুষ হয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, উন্নত জীবন পায় সেটা আমাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে। একটা ন্যায়পরায়ণ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করার মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্ম গণমানুষের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণে বিপ্লবী ভূমিকা রাখবে এটাই আমাদের অঙ্গীকার। এভাবেই বাংলার আপামর জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ একটা নববিপ্লবের সূচনা করবে আমাদের প্রগতিশীল যুবসমাজ।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, তবে এই পথে প্রধান বাধা ঐ মনুষ্যত্ব বিবর্জিত স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। ফলে আমাদের সংগ্রাম স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার, আল-বদর, আল শামসদের বিরুদ্ধে, বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে। আমাদের প্রতিরোধ পশুতুল্য যুদ্ধাপরাধীদের দোসরদের বিরুদ্ধে। আমাদের জাগ্রত হতে হবে তাদের বিরুদ্ধে, যারা ভয়াবহ সেই আগস্টের রাতের অন্ধকারে জাতির পিতাকে অমানবিক ও নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, ওরা সম্পূর্ণরূপে মনুষ্যত্ব বিবর্জিত হয়ে বিনা বিচারে নারী-শিশু হত্যা করে। এমনকি ক্ষমতা লুণ্ঠন করেও প্রবল প্রতাপের সাথে মার্শাল-ল’ জারি করে বিএনপি নামের তথাকথিত রাজনৈতিক দল গঠন করে।  

তিনি বলেন, যারা রেফারেন্ডামের মাধ্যমে হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে অবৈধ ক্ষমতা বৈধতা দেবার ন্যক্কারজনক চেষ্টা চালায়। যারা অমানুষের মত গণহত্যা চালিয়ে শত শত মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারদের হত্যা করে। আমাদের প্রতিরোধ তাদের বিরুদ্ধে, যারা অমানবিকতার চরম নিদর্শনস্বরূপ ১৫ই আগস্টের খুনিদের পুরস্কৃত করে। ওই পশুতুল্য খুনিরা ৩রা নভেম্বর জেলখানায় বিনা বিচারে আমাদের জ্যেষ্ঠ ৪ জাতীয় নেতাদের হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করে নাই।

শেখ পরশ বলেন, আমাদের প্রতিরোধ গড়তে হবে তাদের বিরুদ্ধে, যারা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের ২৫ হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থকদের ’৭১ সালের গণহত্যার আদলে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। প্রতিরোধ গড়তে হবে ঐ হায়েনাদের বিরুদ্ধে যারা বিরোধীদলের শান্তি সমাবেশে যুদ্ধে ব্যবহৃত গ্রেনেড মেরে ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের প্রায় ২৫ জন নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে। আমাদের প্রতিরোধ তাদের বিরুদ্ধে যারা এখনো অগ্নিসন্ত্রাস করে নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারে। যারা এই ধরণের অমানবিক বর্বরতা রাজনীতিতে অভ্যস্ত তাদের তো শেখ হাসিনার মানবিক বাংলাদেশ পছন্দ হবে না। তাদের বাংলাদেশের মানবিক উন্নয়ন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার ভাল লাগবে না। এটাই বাস্তবতা।

তিনি বলেন, রংপুর বিভাগকে একসময় মঙ্গা কবলিত ও পশ্চাদপৎ ভাবলেও গত ১৫ বছরে সে অবস্থার যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। রংপুর বিভাগ এখন খাদ্য-শস্য উদ্বৃত্ত একটি অঞ্চল। একসময়ের মঙ্গাপীড়িত উত্তরাঞ্চল এখন সমৃদ্ধ জনপদ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক ডিউক, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মো. আবদুর রহমান, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানাসহ কেন্দীয় মহানগর ও রংপুর বিভাগের সকল জেলা ও মহানগরের প্রতিনিধিবৃন্দ।

news24bd.tv/কেআই