নতুন প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় পাকিস্তান

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন

নতুন প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ এখন চলছে গণনা। আজই জানা যাবে ফল। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেননি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তবে তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

দলীয় ‘ব্যাট’ প্রতীকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়ায় দলটির নেতারা স্বতন্ত্র হিসেবে আলাদা আলাদা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৮টা পর্যন্ত ২৬৫ আসনের মধ্যে মাত্র ৯টি আসনের ফল পাওয়া গেছে। দেশটির প্রভাবশালী ডন পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে বলা হয়েছে, এই ৯ আসনের ৩টিতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থী, ৪টিতে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন), ২টিতে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।  

বর্তমানে দুর্নীতির মামলায় কারান্তরীণ ইমরান খান।

তবে জনপ্রিয়তায় তার ধারে কাছেও নেই নওয়াজ শরিফ কিংবা পাকিস্তান পিপলস পার্টি। কারাগার থেকে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিয়েছেন ইমরান খান। এর আগে নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্টে সমর্থকদের বার্তা দিয়েছেন ইমরান। এতে ভোট দেওয়ার পর সমর্থকদের কেন্দ্রের বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৈশ্বিক নানা মিডিয়া ও থিংক-ট্যাংক বলছে, পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনে জিততে চলেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আর এই অনুমান সঠিক হলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজের এটি হবে চতুর্থ মেয়াদ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান মুসলিম লীগের প্রধান নেতা নওয়াজ শরিফ ২০২৪ সালের এই সাধারণ নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হবেন বলে মার্কিন মিডিয়া এবং থিংক ট্যাংকগুলোর পাশাপাশি বিবিসি, গার্ডিয়ান এবং এএফপিসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটগুলো অনুমান করছে।

সিএনএন জানায়, ‘নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে স্পষ্টভাবে এগিয়ে ছিলেন ইমরান খানের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফ। ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী পুনরায় নির্বাচিত হতে চাইছেন এবং তেমনটি হলে বিদেশে কয়েক বছরের স্বেচ্ছায় নির্বাসনের পর এটি হবে নওয়াজের জন্য উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন। ’

নির্বাচনে নওয়াজ শরিফ ও তাঁর দল পিএমএল-এন জিতবে বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্রুকলিন ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাতে বলা হয়, নির্বাচনে যদি পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কোনোভাবে জয় পান, তাহলে সেটি হবে দলটির জন্য বড় একটি চমক। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্যমতে, এবারের নির্বাচনটা হয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে এবং নওয়াজের পক্ষে।

পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে নওয়াজের জয়ের পথ পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থন নিয়ে দেশটির পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে যাচ্ছে নওয়াজের দল পিএমএল-এন। ’

নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন যদি পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তাহলে তিনি পিপিপিসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গে জোট সরকার গঠন করতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। যদিও গতকাল নওয়াজ বলেছেন, ‘আল্লাহর দোহাই, জোট সরকারের কথা বলবেন না। দেশের জন্য কোনো দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ’

পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজকেই ভালো পছন্দ মনে করছেন লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক ও যুক্তরাজ্যের সাবেক কূটনীতিক টিম উইলেসি-উইলসি। তিনি বলেন, ‘নওয়াজ শরিফ একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে তিনি সব সময়ই দক্ষতা দেখিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গেও তিনি ভালো সম্পর্ক চাইবেন।

news24bd.tv/আইএএম