এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের রোবট। বাংলাদেশের রোবট গবেষণার এক উজ্জ্বল মুখ এ এস ফারদিন আহমেদ তার দীর্ঘ ১২ বছরের রোবট গবেষণা অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করছেন আন্তর্জাতিক মানের রোবট; যেগুলা গুনে মানে উন্নত দেশের রোবটের মতোই আধুনিক, কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী।
বর্তমানে তিনি যে রোবটগুলা তৈরি করছেন এগুলো এখন সরাসরি প্রোডাক্ট, যেগুলো ব্যবহার করা যাবে বিভিন্ন কোম্পানি, রেস্টুরেন্ট, অফিস, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রির্সোটসহ যেকোনো জায়গায়।
তিনি দীর্ঘ রোবোটিকস কেরিয়ারে ৩ হাজারের অধিক রোবোটিক্স প্রোজেক্ট এবং প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থীকে রোবোটিক্স প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
এ এস ফারদিন আহমেদের প্রতিষ্ঠিত ফারবোট রোবোটিকস কোম্পানিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেশের রোবটিক্সের বিস্তার ঘটাতে। এর পাশাপাশি ২০২২ সালে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা এবং গবেষক হিসেবে যোগ দেন।
সম্প্রতি একটি মুভিতেও তার তৈরি রোবট অভিনয় করেছে।
নিজের তৈরি বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট সম্পর্কে নিউজ টোয়েন্টি ফোরকে জানিয়েছেন এ এস ফারদিন আহমেদ।
![1](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/1 (11).jpg)
রোবট ফারবোট-১
রোবট ফারবোট-১ ছিল এ এস ফারদিন আহমেদের তৈরি প্রথম হিউম্যান রোবট। এটি তিনি ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের গবেষণায় প্রজেক্ট হিসেবে তৈরি করেন। রোবটটি কথা বলতে পারতো এবং বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দেখাতে পারতো। রোবট সোফিয়া বাংলাদেশে যেদিন এসেছিল ঠিক তার পরের দিন এই রোবটটি লঞ্চ হয়েছিল। তখন বাংলাদেশে মাত্র দুটি হিউম্যান রোবট ছিল। এর মধ্যে এটি একটি।
![2](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/2.jpg)
রোবোট ফারবোট-২
এ এস ফারদিন আহমেদ রোবোট ফারবোট-২ তৈরি করেছিলেন ২০১৯ সালে একটি ইভেন্টকে কেন্দ্র করে। ইভেন্টের শিক্ষার্থীদের রোবোটিক্স-এর প্রতি আগ্রহ তৈরির উদ্দেশ্যে এটি তৈরি করা হয়। মাত্র ৭ দিনে এই রোবটটি তৈরি করেছিলেন।
![4](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/3.jpg)
রোবট ফারবোট-৩
২০২০ সালে করনার সময় তৈরি জয় ফারবোট তৃতীয় ভার্সন ফারবোট-৩। মূলত এটি ছিল একটি প্রোডাক্ট, যেটি অফিস রেস্টুরেন্ট শপিংমলে ব্যবহার করা যেত। এই রোবটটির কয়েকটি আলাদা আলাদা মোড ছিল। সেল্ফ মোড, অফিস মোড, রেস্টুরেন্ট মোড। বিভিন্ন মোডে রোবটিটি বিভিন্ন আচরণ করতো।
![1](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/4.jpg)
রোবট ফারবোট-৪
ফারবোট এর চতুর্থ ভার্সন ফারবোট-৪। যেটি অত্যন্ত আধুনিক একটি রোবট। ২০২১ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশ আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ফারদিন আহমেদ এই রোবটটিকে আরও আধুনিক রোবট হিসেবে রূপ দেন। বর্তমান এই রোবটের নিজস্ব ইউজার ইন্টারফেস রয়েছে, যেটি একটি অপারেটিং সিস্টেমের মতোই।
৩.৫ গিগাবাইটের নিজস্ব সফটওয়্যার রয়েছে এই রোবটটিতে। কম্পিউটার ভিশন মেশিন লার্নিং এবং প্যারালাল কম্পিউটিংয়ের একটি চমৎকার ব্যবহার হয়েছে এই রোবটটিতে, যে ফিচারগুলো রোবটিকে আধুনিক এবং উন্নত দেশের রোবটগুলোর মতোই অত্যন্ত ব্যবহার উপযোগী।
![2](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/5.jpg)
রোবট পদ্মা
রোবট পদ্মা ২০২২ সালে একটি ইউনিভার্সিটির ছাত্র-শিক্ষকদের নিয়ে তৈরি করেন এ এস ফারদিন আহমেদ। বাংলাদেশের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সপ্তাহেই রোবটটি লঞ্চ হয় এবং সে সময়ে রোবটটির নাম রাখা হয় রোবট পদ্মা।
![4](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/6.jpg)
রোবট ইউজিভি
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে রোবট ইউজিভি তৈরি করেন ফারদিন আহমেদ। এই রোবটটিতে ছিল আধুনিক ডিজাইন, ফিচার এবং এটি দেশের প্রথম চ্যাটজিপিটি রোবট। রোবটটিতে ছিল প্যারালাল কম্পিউটিং, কম্পিউটার ভিশন এবং মেশিন লার্নিংয়ের মতো আধুনিক ফিচার। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ এস ফারদিন আহমেদের তৈরি এই রোবটটি ছিল সব থেকে আধুনিক রোবট। পরে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি ফারবোট-৪ কে এর থেকেও আধুনিক করে তোলেন। এখন ফারবোট-৪ ই হচ্ছে বর্তমান দেশের সব থেকে আধুনিক রোবট।
![7](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/7.jpg)
এই রোবটগুলো ছাড়াও এস ফারদিন আহমেদের কাজ করা আরও কয়েকটি হিউমানের রোবট রয়েছে; যেগুলা ক্লায়েন্ট বেস প্রজেক্ট হওয়ার কারণে সেভাবে উল্লেখ করেননি। হিউমিনিট রোবট ছাড়াও অনেক ধরনের রোবট নিয়ে কাজ করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে বর্তমান তার প্রজেক্ট সংখ্যা তিন হাজারের অধিক এবং তিনি প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন।
![৮](https://cdn.news24bd.tv/public/news_images/photo/shares/2024 All/book.jpg)
news24bd.tv/আইএএম