ভোটের মাঠের খেলোয়াড় ‘স্বতন্ত্ররা’

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে

পাকিস্তানে নির্বাচন

ভোটের মাঠের খেলোয়াড় ‘স্বতন্ত্ররা’

অনলাইন ডেস্ক

ভোটগ্রহণের পর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। তবে এ নির্বাচনে এককভাবে সরকার গঠনের মতো আসন পায়নি কোনো রাজনৈতিক দলই। এককভাবে সরকার গঠন করতে কোনো দলকে জিততে হবে ১৩৪টি আসনে। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানে নির্বাচনে কোনো দলই এই শর্ত পূরণ করতে পারেনি।

যদিও এককভাবে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের স্বতন্ত্ররা। ফলে জোটের ওপর নির্ভর করছে সরকার গঠন।  

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানে ঘনিষ্ঠ ও মিডিয়া উপদেষ্টা জুলফি বুখারি জানিয়েছেন, পিটিআই খুব দ্রুতই দলীয় ব্যানারের নাম ঘোষণা করবে। এরপরই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এ জোটে যোগ দিতে বলা হবে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম ডন বলছে, ২৫৩ আসনের ফল প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থক নেতারা জিতেছেন ৯২টি আসনে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিএমএল–এন জিতেছে ৭১টিতে। ৫৪টি আসন পাওয়া পিপিপির সঙ্গে তারা জোটে রাজি হয়েছে বলে জানায়।

এই জোট নিয়েই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল–এন (৭১) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি (৫৪) জোটে রাজি হলেও এখনো তারা মিলে ১৩৪টি আসনে জিততে পারেনি। মোট জিতেছে ১২৫টিতে। আরও ১২টি আসনের ফল বাকি। একটিতে ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।

৩৩টি আসনে জিতেছে অন্যান্য ছোট দলগুলো। এ কারণে এখন জোট আরও বড় করার চিন্তা করছেন নওয়াজ। তবে ১৩টির মধ্যে ৯টি তার জোট পেলেই স্বস্তি মিলবে।  

তা না হলে ইমরানকে সমর্থন দেওয়া জয়ী নেতাদেরও জোটে টানতে চাইবেন নওয়াজ শরিফ ও বিলাওয়াল ভুট্টো। তারা জোটে আসবেন কিনা, সেটি বড় প্রশ্ন।  

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা বলছে, এই অবস্থায় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও জোট করতে পারেন নেতারা। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষক আসমা ওয়াদুদ। তিনি বলেন, আগেও এমন জোট হয়েছে। কিন্তু এর ফল ভালো হয়নি। এবারও এমন হলে দলগুলোর সমর্থকেরা হতাশ হবেন। এতে আরও জটিলতা তৈরি হবে।  

এমন অবস্থায় দলগুলো রাজনৈতিক পুঁজিও হারাতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষক আসমা ওয়াদুদ।  

পাকিস্তানে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এ নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ভোট গণনা প্রায় শেষের দিকে। সবশেষ খবরে জানা গেছে, কোনো দলই এখন পর্যন্ত একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে জোট ছাড়া সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, জোট সরকার গঠনে রাজি হয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পিএমএল-এন দলের প্রধান দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আর পিপিপির প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। বিলাওয়াল দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টার সন্তান।

সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনে তুমুল লড়াই হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও পিএমএল-এনের মধ্যে। ইমরান খান বিভিন্ন মামলায় সাজা পেয়ে এখনো কারাবন্দী রয়েছেন এবং আইনি জটিলতায় তাঁর দল পিটিআই নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। ফলে পিটিআইয়ের বেশির ভাগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা বেশির ভাগ আসনে জয়ও পেয়েছেন। কিন্তু নওয়াজের দল কিংবা ইমরানের দল—কোনোটিই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় যেতে জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন নওয়াজ শরিফ।

news24bd.tv/aa