রপ্তানিমুখী অর্থনীতির পথে উত্তরাঞ্চল 

রপ্তানিমুখী অর্থনীতির পথে উত্তরাঞ্চল 

মতিউর মর্তুজা, রাজশাহী

কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে রপ্তানিমুখী অর্থনীতির পথে যাত্রা শুরু করলো দেশের উত্তরাঞ্চল। রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ নৌ বন্দর চালুর মাধ্যমে এই যাত্রার শুভ সূচনা হলো বলে মনে করেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।

দীর্ঘ ৫৯ বছর অপেক্ষার পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৫৯ বছর পর আবারো চালু হলো রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ ময়া পোট অব কল নৌরুট।

আজ সোমবার সকাল ১১ টায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ প্রান্তে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃব্যে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে আমাদের চুক্তি হয়েছে, আমরা ব্যবসা বাণিজ্যসহ জীবন-জীবিকায় ভারতের সাথে যুক্ত হয়েছি। আমাদের এই বন্ধন মুক্তিযুদ্ধ থেকেই। আমরা ভারতীয় মুদ্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারব। সুলতানগঞ্জ -ময়া নৌ রুটের পাশাপাশি রাজশাহী- হুলিয়ান নৌরুট চালু করা হবে।

এছাড়া সুলতানগঞ্জ থেকে আরিচা পর্যন্ত ২৭২ কিলোমিটার পর্যন্ত পদ্মা নদী ডেজিং করে নৌ রুট পুরোপুরি চালু করা হবে।

অবুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয়  হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সব সময় অত্যন্ত সহযোগিতাপূর্ণ। এই নৌপথ চালুর মাধ্যমে দুই দেশই লাভবান হবে। আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি খরচ ও সময় বাঁচবে।

রাজশাহী সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমার নির্বাচনী ইশতেহার ছিল নৌ বন্দর চালু করা। আজ সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়েছে। সেই সাথে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার অবসান হলো।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা জানান, আগামী ২ বছরের মধ্যে এখানে স্থায়ী বন্দর অবকাঠামো এবং আরিচা পর্যন্ত নদী খনন সহ সার্বিক কাজ শেষ করা হবে। প্রাথমিকভাবে এ রুট দিয়ে ভারত থেকে পাকুড় পাথর, সিমেন্ট তৈরির মালামাল নিয়ে আসা হবে। নদী পথের দিয়ে আসায় নির্মাণ সামগ্রী আমদানি খরচ কমবে। ফলে ডলার সাশ্রয় হবে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকেও কৃষি পণ্যসহ অন্যান্য রপ্তানিযোগ্য পণ্য রপ্তানি করা হবে।  

বাংলাদেশ- ভারত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রমণ ও বাণিজ্য প্রটোকল এর ৪ ও ৫ নং আওতাভুক্ত সুলতানগঞ্জ, গোদাগাড়ী পোর্ট অব কল এবং সুলতানগঞ্জ-মায়া নৌপথ চালু করায় খুশি ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, নৌ রুটের ফলে আমদানি-রপ্তানি উভয় প্রকার ব্যয় সাশ্রয় হবে। ফলে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সবাই লাভবান হয়ে পারবে। সময় কম লাগায় দ্রুত সময়ে পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে।

অর্থনীতি বিশ্লেষক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন বলেন, নৌ বন্দর পুরোপুরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি রপ্তানীমুখী অর্থনীতিতে পরিণত হবে। এর ফলে জিডিপিও ১ শতাংশ বাড়তে পারে। এছাড়া আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ কমার ফলে রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে হারলেন ড. ইউনূস, দিতে হবে ৫০ কোটি টাকা

news24bd.tv/তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক