কৃষি জিডিপিতে পাট খাতের অবদান ২৬ শতাংশ: কৃষিমন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

কৃষি জিডিপিতে পাট খাতের অবদান ২৬ শতাংশ: কৃষিমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, কাঁচা পাট ও পাট পণ্য রপ্তানি করে ৩-৪ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়, যার মূল্যমান ১.২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার। দেশের জিডিপি-তে পাট খাতের অবদান ১.৪ শতাংশ এবং কৃষি জিডিপিতে পাট খাতের অবদান ২৬.২৬ শতাংশ। বিশ্বে আঁশ উৎপাদনে তুলার পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আঁশ হিসেবে পাটের অবস্থান।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) এর প্রধান কার্যালয়ে “বিজেআরআই এবং জেনোম গবেষণা কেন্দ্রের সাফল্য ও সম্ভাবনা” বিষয়ক একটি সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এই সেমিনারে উপস্থিত থেকে বিজেআরআই এবং জেনোম গবেষণার অগ্রগতি সম্পর্কে, বিশেষ করে বিজেআরআই-এর বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ৫৬ টি উচ্চ ফলনশীল পাট ও পাট জাতীয় আঁশ ফসলের জাত এবং ২২৩ টি বিজেআরআই এর উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পেরে আমি আনন্দিত। ’

তিনি বলেন, ‘‘পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য সম্প্রতি বর্তমান সরকার পাটকে ‘কৃষি পণ্য’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী পাট ও পাট পণ্যকে ‘বর্ষপণ্য ২০২৩’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন। ’’

বিশ্বে আঁশ উৎপাদনে তুলার পরই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আঁশ হিসেবে পাটের অবস্থান। বিশ্বে পাট উৎপাদনে এবং পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশের পাট প্রথম অবস্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশের ৪০-৫০ লাখ কৃষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাট উৎপাদনের সাথে জড়িত। ২০১০ এবং তার পরবর্তী সালে ৭-৮ লাখ হেক্টর জমিতে ১৪.৫-১৬.২ লাখ টন পাট ও পাট জাতীয় আঁশ উৎপন্ন হয়। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৭.৪৫ লাখ হেক্টর জমিতে ১৫.০২ লাখ টন পাট উৎপন্ন হয়।  
পাট বিজ্ঞানী ড. মাকসুদুল আলমের প্রশংসা করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, পাট গবেষণার বিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক মানের জিনম সিকোয়েন্সিং করছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘সার্বিকভাবে কৃষিই হলো খাদ্যনিরাপত্তা থেকে শুরু করে শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের সবচেয়ে শক্তিশালী উৎসস্থল। কৃষিপণ্য হিসেবে পাট বিশ্বে ২৮২ ধরনের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। পাট খাতের বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। ’

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াসমিন। উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ড. মো. আবদুল আউয়াল।

সভাপতির বক্তব্যে বিজেআরআই এর মহাপরিচালক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪ এ অঙ্গীকার করেছেন ‘পরিবশেবান্ধব বিবেচনায় বিশ্বব্যাপী পাট ও পটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এই সুযোগ নেওয়ার জন্য পাটপণ্যে বৈচিত্র্য আনা হবে এবং পাটশিল্পকে লাভজনক করার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। পাটশিল্পে বেসরকারি খাতের উদ্যোগ উৎসাহিত করা হবে’। এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট বদ্ধপরিকর। ”
 
ড. আউয়াল বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে ২০২৩-২৪ এ পাটের জাত উন্নয়ন ও অন্যান্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন বিষয়ে ১৭৩ টি এবং পাটের বহুমুখী পণ্য ও শিল্প প্রযুক্তি উদ্ভাবন বিষয়ে ৫৪টি গবেষণা পরীক্ষণ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের সময়ে (২০০৯ সাল হতে অদ্যাবধি) বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট মোট ১৬টি জাত (দেশি পাট ৬টি, তোষা পাট ৪টি কেনাফ ৩টি এবং মেস্তা ৩টি), ৭৩টি কৃষি প্রযুক্তি এবং ৩৫টি শিল্প ও কারিগরি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। ’

জেনোম গবেষণার কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে আগত অতিথিদের অবহিত এবং গবেষণা কেন্দ্রটির ল্যাবরেটরি পরিদর্শন করান জেনোম গবেষণা দপ্তর এর গবেষণা সমন্বয়কারী ড. কাজী মো. মোছাদ্দেক হোসেন। বিজেআরআই এর গবেষণা কার্যক্রমের সাফল্য ও সম্ভাবনা সম্পর্কে উপস্থাপনা করেন বিজেআরআই এর প্রশাসন ও অর্থ উইং এর পরিচালক ড. এস. এম. মাহবুব আলী।

news24bd.tv/আইএএম