‘হজ নয়, হাজীদের খেদমতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পাঠানো হয়’

হজ নয়, হাজীদের খেদমতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পাঠানো হয়

সংসদে ধর্মমন্ত্রী

‘হজ নয়, হাজীদের খেদমতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী পাঠানো হয়’

অনলাইন ডেস্ক

হজ যাত্রীদের সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হজের উদ্দেশে পাঠানো হয় না। হজ ব্যবস্থাপনা ও হাজীদের সেবা প্রদানে বিভিন্ন টিমে তাদের পাঠানো হয় বলে সংসদকে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

মঙ্গলবার সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

ঢাকা-১৯ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম তার প্রশ্নে বলেন, প্রতি বছর সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী সরকারি টাকায় হজে যায়। সরকারি টাকা/অর্থ জনগণের টাকা। অন্যের টাকায় হজ সঠিক হবে কি না; এবং যেসব কর্মকর্তা/কর্মচারী হজে যায় তারা হাজীদের কতটুকু খেদমত করে?

জবাবে ধর্মমন্ত্রী বলেন, হজ ব্যবস্থাপনা ও হাজীদের সেবা প্রদানের দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন টিমে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশি হাজীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার উদ্দেশে মেডিকেল সেন্টার ও ক্লিনিক পরিচালিত হয়।

মিনা-আরাফা, মুজদালিফা-জামারা এবং মক্কা ও মদিনায় হাজীদের সেবার উদ্দেশে সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের (হজ প্রতিনিধি টিম, হজ প্রশাসনিক টিম, হজ মেডিকেল টিম, হজ কারিগরি টিম এবং হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী) বিভিন্ন টিমে সৌদি আরব পাঠানো হয়। সরকারি টাকায় হজ করতে তাদের পাঠানো হয় না।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বয়স্ক হাজীদের চিকিৎসা সেবাসহ সব ক্ষেত্রে টিমের সদস্যগণ হাজীদের যথাযথ খেদমত করে থাকেন। দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়।

পিরোজপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের প্রশ্নের জবাবে ধর্মমন্ত্রী জানান, সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিয়েনর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৃহৎ জনবলের ভাতা দেয়া আপাতত সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

আরেক স্বতন্ত্র সদস্য মশিউর রহমান মোল্লা সজলের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি।

ফরিদুল হক খান বলেন, হজযাত্রী প্রেরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রী কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। বিগত বছরগুলোর মতো ২০২৪ সালেও যেন পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী হজে যেতে পারে সেজন্য ২০২৩ সালের হজের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কমিয়ে ২০২৪ সালে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা মূল্যের সাধারণ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হজে যেতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে মক্কা ও মদিনার অনেক এলাকায় বাড়ি ও হোটেল ভেঙে ফেলায় বাড়ি ভাড়া অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক নানা কারণে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্যও বেড়েছে। এ ছাড়া মিনা-আরাফায় তাবু ভাড়াসহ মেয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কারণে সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় আর কমানো সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, অধিক সুযোগ সুবিধা আশা করেন এমন হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি মাধ্যমের বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। সোহরাব উদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকারের নীতি-আদর্শের কারণে দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির উন্নতি হচ্ছে।

news24bd.tv/aa