কিশোর গ্যাং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ 

জাতীয় সংসদ

কিশোর গ্যাং নিয়ে সংসদে ক্ষোভ 

অনলাইন ডেস্ক

সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, রাজধানীর মানুষের অশান্তির বড় কারণ কিশোর গ্যাং। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।  
 
কিশোর গ্যাং নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ২০২৩ সালে ২৫টি খুনের সঙ্গে কিশোর গ্যাং জড়িত। বাহিনী বেশি মিরপুর, ডেমরা ও সূত্রাপুরে।

ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে ভাড়া খাটা, উত্ত্যক্ত করা, খুনে সম্পৃক্ত হচ্ছে। পুলিশের নিজস্ব প্রতিবেদন সূত্রে ঢাকায় গাংচিল বাহিনীর মতো অন্তত ৮০টি বাহিনীর খোঁজ পাওয়া গেছে। যেগুলোর বেশির ভাগ ‘কিশোর গ্যাং’ নামে পরিচিত। নামে কিশোর গ্যাং হলেও এসব বাহিনীর বেশিরভাগ সদস্যের বয়স ১৮ বছরের বেশি।
তারা ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখলে সহায়তা, ইন্টারনেট সংযোগ, ক্যাবল টিভি (ডিশ) ব্যবসা ও ময়লা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, উত্ত্যক্ত করা, যৌন হয়রানি করা, হামলা, মারধরসহ নানা অপরাধে জড়িত।
 
বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ বলেন, সারা দেশের ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়ে পুলিশ প্রতিবেদন তৈরি করেছিল ২০২২ সালের শেষ দিকে। এতে বলা হয়েছে, সারাদেশে অন্তত ১৭৩টি কিশোর গ্যাং রয়েছে। বিভিন্ন অপরাধে এদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৭৮০টি।

এসব মামলায় আসামি প্রায় ৯০০ জন। রাজধানীতে কিশোর গ্যাং রয়েছে ৬৬টি। চট্টগ্রাম শহরে আছে ৫৭টি। মহানগরের বাইরে ঢাকা বিভাগে রয়েছে ২৪টি গ্যাং। বেশিরভাগ বাহিনীর সদস্য ১০ থেকে ৫০ জন।

ঢাকায় অনুসন্ধান চালিয়েও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের প্রতিবেদনে যে চিত্র উঠে এসেছিল, তার চেয়ে এখন পরিস্থিতি খারাপ। যেমন পুলিশের তালিকার বাইরে ঢাকায় আরো অন্ততঃ ১৪টি কিশোর গ্যাংয়ের খোঁজ পাওয়া গেছে।
 
ক্ষোভ প্রকাশ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বাহিনীগুলো শুধু অপরাধই করে না, আধিপত্য বজায় রাখতে পরস্পরের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়। ডিএমপি সূত্র বলছে, ২০২৩ সালে রাজধানীতে যত খুন হয়েছে তার ২৫টির কিশোর গ্যাং সংশ্লিষ্ট। এই বাহিনীগুলো একদিনে গড়ে ওঠেনি। রাজনীতিবিদদের প্রশ্রয়ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় এসব বাহিনী এখন ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। রাজধানীর মতো বড় বড় শহরে মানুষের নিরাপদ বসবাসের ক্ষেত্রে বড় হুমকি হয়ে উঠেছে এসব বাহিনী। ঢাকায় ২১ জন কাউন্সিলরের নাম এসেছে যাদের আশ্রয়ে কিশোর গ্যাং গড়ে উঠেছে। তবে তাদের নামগুলো বলছি না। যেহেতু তাদের ডিফাইন করার সুযোগ নেই।
 
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে সাধারণের মানুষের বসবাস কঠিন। এসমস্ত বাহিনী যারা চাঁদাবাজি ও লুটপাট করছে, যারা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে তারা পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে। আমার প্রশ্ন নতুনভাবে সরকার গঠন করা হয়েছে। এসবের সঙ্গে যেসমস্ত লোক জড়িত সেটা সরকার দলের হোক বা পুলিশের  হোক এগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ঢাকা শহরের মানুষকে শান্তিতে বসবাস করার সুযোগ করে দেওয়া হোক। এদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে পরিকল্পনার মাধ্যমে আইনের আশ্রয়ে আনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

news24bd.tv/আইএএম