‘মাদ্রাসার সভাপতি হতে না পেরে’ অধ্যক্ষের ওপর হামলা

হাসপাতালে আহত অধ্যক্ষ।

‘মাদ্রাসার সভাপতি হতে না পেরে’ অধ্যক্ষের ওপর হামলা

আব্দুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের পাইকশায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে না পেরে ইসলামনগর দারুস সুন্নাত ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিকেলে মাদ্রাসার মাঠে পাইকশা এলাকার সেলিম রেজা নামে এক ব্যক্তি নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগে জানা গেছে।

সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহত অবস্থায় অধ্যক্ষ বজলুর রহমানকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

আহত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বজলুর রহমান জানান, পাইকশা গ্রামের জেলহক পান্ডার ছেলে সেলিম রেজা কয়েক বছর আগে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ছিল।

কিছুদিন আগে সেলিম রেজা মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির হওয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী তিনি ডিগ্রি পাস না। এরপর তিনি এলাকা থেকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন করতে চাপ দেয়। এরমধ্যেই স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশক্রমে আব্দুল মালেক নামে একজনকে সভাপতি নির্বাচন করে ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়।
এ নিয়ে সেলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগও দিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে নিষ্পতি করে দিয়েছে। এরপরও সেলিম রেজা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে মাদ্রাসায় একটি নিয়োগ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক আহ্বান করা হয়। বৈঠক শেষে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার সময় মাদ্রাসার মাঠেই সেলিম রেজা মোটরসাইকেল লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এ সময় সেলিম রেজাসহ ৮/১০ জন ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে মারপিট শুরু করে। তাদের মারপিটে হাতের কব্জি ও হাটু ফেটে গেছে। এছাড়াও পিঠে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানোর কারণে জখম হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এর আগেও তিনি আমাকে মারপিট করেছিলেন। তিনি ঘটনায় মামলাও রয়েছেন।

আজকের মারপিটের ঘটনায় সুস্থ হবার পর মামলা দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সেলিম রেজা বলেন, আমি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হতে পারেনি। তাই এলাকার লোকজন আমার ছোট ভাইকে সভাপতি করার জন্য সিলেকশন করেছিল। কিন্তু মাদ্রাসা সুপার বজলুর রহমান স্থানীয় লোকজনের সাথে কোনো পরামর্শ ছাড়া এমনকি স্থানীয় এলাকাবাসীকে তোয়াক্কা না করেই অন্য একজনকে সভাপতি করে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেছে। আবার এলাকার মানুষের সাথে কথা না বলেই মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেছে। এছাড়াও কোনো কিছু হলেও মামলার ভয় দেখায়। এমনকি একটি মামলাও দায়ের করেছে। এসব ঘটনা নিয়ে স্থানীয় ২০/২৫ ছেলে ক্ষুদ্ধ হয়ে অধ্যক্ষের সাথে কথাকাটি করার এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি করেছে। তবে কোনো মারপিটের ঘটনা ঘটেনি।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আহত অধ্যক্ষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন: দায়িত্ব পেয়েই ‌‘সাফ কথা’ জানিয়ে দিলেন গাজী আশরাফ

আরও পড়ুন: ২৫৫ কেজি ওজনের বাঘের মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

news24bd.tv/তৌহিদ