প্রবেশপত্র পেলেন না ১৪ এসএসসি পরীক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক অবরুদ্ধ

প্রবেশপত্র না পাওয়া শিক্ষার্থীরা

প্রবেশপত্র পেলেন না ১৪ এসএসসি পরীক্ষার্থী, প্রধান শিক্ষক অবরুদ্ধ

শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের শ্রীবরদীতে প্রধান শিক্ষকের গাফিলতিতে প্রবেশপত্র না পাওয়ায় চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে ১৪ শিক্ষার্থী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের গবরীকুড়া আকন্দ কলম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে।  

১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেল পর্যন্ত পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পাওয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী গবরীকুড়া আকন্দ কলম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের কক্ষে প্রধান শিক্ষককে অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় গবরীকুড়া আকন্দ কলম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলামকে উদ্ধার করে।

এ নিয়ে বিদ্যালয় মাঠে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।  

এদিকে রাতেই ওই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র সংগ্রহের জন্য ময়মনসিংহ বোর্ডে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

জানা গেছে, বুধবার সকালে শ্রীবরদী উপজেলার গবরীকুড়া আকন্দ কলম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে যান শিক্ষার্থীরা। ওই সময় ১৪ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র বোর্ড থেকে আসেনি বলে জানান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলামকে অবরোধ করে রাখেন।

স্থানীয় ভ্যানচালক মো. আফরোজ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ে আশামনিকে খুব কষ্ট করে স্কুলে পড়িয়েছি। ভ্যান চালিয়ে ফরম ফিলাপের টাকা দিছি। আজকে শুনি এডমিট কার্ড আসেনি। আমি মেয়েকে কী বলব? 

আরেক অভিভাবক ওয়াহেদ আলী বলেন, আমার মেয়ের পরীক্ষার সকল পাওনাদি দিয়েছি। আমার মেয়ের প্রবেশপত্র আসেনি। আমি স্যারদের উপযুক্ত বিচার চাই।

গবরীকুড়া আকন্দ কলম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. সেলিম মিয়া বলেন, আমি শুনেছি ১৪ জন শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র আসেনি। আমি এ সব কাজ করি না। বিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ করেন সহকারী শিক্ষক কৃষি মো. জুলফিকার হায়দার।

এ বিষয়ে জানার জন্য গবরীকুড়া আকন্দ কলম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলামের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফৌজিয়া নাজনীন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, প্রধান শিক্ষককে উদ্ধারের জন্য পুলিশকে জানিয়েছি, পুলিশ যাচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেন শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র পেলেন না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রেজুয়ান বলেন, ঘটনাটি কী কারণে ঘটলো সেটার আগে ওই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি। আমরা জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি জানিয়েছি। সেইসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, তারা প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
news24bd.tv/আইএএম