ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, ভুক্তভোগীর মায়ের মামলা

নেত্রকোনার মদনে কলেজে যাওয়ার পথে এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।

ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, ভুক্তভোগীর মায়ের মামলা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

নেত্রকোনার মদনে কলেজে যাওয়ার পথে এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাজন মিয়া (২২) নামের এক বখাটে যুবকের বিরুদ্ধে মদন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত সাজন মিয়া মদন পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাসুদ মিয়ার ছেলে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রী মদন উপজেলার জোবাইদা রহমান মহিলা ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেনীতে পড়ছে।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নেত্রকোনার মদন পৌর সদরের বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার সময় বখাটে যুবক সাজন তার পথ রোধ করে কুপ্রস্তাব দেয়।

এক পর্যায়ে জোরপূর্বক দেওয়ান বাজার রোডের একটি চালের দোকানে ওই ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে সাজনের এক সহযোগী দোকান বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। ওই দোকানে কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে সাজন।

পরে ঘটনাটি পরিবারকে জানায় কলেজ ছাত্রী। এরপর বৃহস্পতিবার সাজনের বিরুদ্ধে মদন থানায় মামলা করেন কলেজ ছাত্রীর মা।

ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, বাসা থেকে বের হয়ে কলেজে যাওয়ার পথে সাজন আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে পিছু নেয়। একটি দোকানের সামনে আসতেই জোরপূর্বক আমাকে তুলে নিয়ে যায়। সেই দোকানের বাহির থেকে আরেকজন লোক তালা লাগিয়ে দেয়। এ  সময় চিৎকার শুরু করলে হত্যার হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে সে। পরে ঘটনাটি আমার পরিবারকে জানিয়েছি। সাজনের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই আমি।

ছাত্রীর মা বলেন, কলেজে যাওয়ার পথে দিন-দুপুরে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে আমার মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। বাসায় গিয়ে মেয়েটি কান্নাকাটি করে আমাকে সব জানিয়েছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এ নিয়ে ভুক্তভোগীর পিতা বলেন, বখাটে সাজন দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকায় শালিশ করলে মাফ চেয়ে পার পেয়েছে। তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে মামলাও করেছে। সে এলাকার চিহ্নিত মাদকাসক্ত বখাটে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

আরও পড়ুন: ১৩ বছর পর বিসিএসের ভাইভায় ডাক পেলেন দেবদাস বিশ্বাস

এদিকে, এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটিসহ কলেজ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। এ সময় অভিযুক্তকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি করেন স্থানীয়রা।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জ্বল কান্তি সরকার জানান, এ ঘটনায় ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানায় মামলা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনার আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এমন ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলপনা বেগম। তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার ব্যবস্থা বিলম্বিত হওয়া ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় এগুলো বেড়েই চলেছে। তাই এ সকল মামলা দ্রুত বিচার আইনে পরিচালনা করণসহ স্থানীয় পুলিশকে আরো সহযোগী মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই কেবল এ সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ভুক্তভোগীরা সঠিক বিচার পাবেন।

মদনের এই ঘটনায় জড়িত ধর্ষক ও সহযোগীকে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ সর্বাত্মক ভূমিকা রাখবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।

news24bd.tv/ab

এই রকম আরও টপিক